আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, যে কোনো মুহূর্তে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সম্ভাব্য সৌরঝড়টি হাজার বছর আগের এক বিধ্বংসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রায় এক হাজার ২৫০ বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হানা সর্বশেষ বড় আকারের সৌরঝড়টি ‘মিয়াকি ইভেন্ট’ নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আসন্ন সৌরঝড়টির প্রকৃতি এবং তীব্রতা সেই মিয়াকি ইভেন্টের মতোই হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ম্যাথিউ ওয়েন্স এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, আরেকটি মিয়াকি ইভেন্টের মতো ঘটনা পৃথিবীতে বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। যদিও এটি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য এক বিস্ময়কর ঘটনা হতে পারে, তবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের জন্য এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। যদি সত্যিই এমন কিছু ঘটে, তবে আমাদের ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হতে হবে।
অধ্যাপক ওয়েন্স আরো আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এ ধরনের শক্তিশালী সৌরঝড় জনজীবনকে সম্পূর্ণভাবে থামিয়ে দিতে পারে।
তিনি জানান, সাধারণত এতো বড় সৌরঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া খুব কঠিন। ঘটনা ঘটার মাত্র ১৮ ঘণ্টা আগে হয়তো কিছুটা আঁচ করা যেতে পারে। তিনি আরো যোগ করেন, ঝড়ের প্রভাবে কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটগুলো বিকল হয়ে যেতে পারে, যা যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দিক নির্ণয় পর্যন্ত সবকিছুতে মারাত্মক সংকট তৈরি করবে। এমনকি বিমান চলাচলেও বড় ধরনের বিভ্রাট দেখা দিতে পারে।
ইতিহাসে এর আগেও শক্তিশালী সৌরঝড়ের নজির রয়েছে। ১৮৫৯ সালে ‘ক্যারিংটন ইভেন্ট’ নামে পরিচিত একটি সৌরঝড় পৃথিবীতে আঘাত হানে। সেই সময় বিশ্বজুড়ে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা বিকল হয়ে গিয়েছিল এবং আকাশে অদ্ভুত সুন্দর অরোরা বা মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, আসন্ন সম্ভাব্য সৌরঝড়টি সেই ক্যারিংটন ইভেন্টের চেয়েও ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হতে পারে।
এই সতর্কবার্তা বিশ্বজুড়ে সরকার এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, কারণ আধুনিক সভ্যতা বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেটের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল।
স্বাআলো/এস