সয়াবিনের সংকট কাটাতে চলতি মাসের শুরুতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
দাম বাড়ানোর পর সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি। উল্টো আরো অস্থির হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বাজার থেকে সয়াবিন তেল হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ নেই বললেই চলে।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বোতলজাত তেল কেটে ড্রামে ভরে খোলা তেলের দামে বিক্রি করছেন, এতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম গুনতে হচ্ছে। ভোক্তারা সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত এবং তেলের বাজারে স্বচ্ছতা আনতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ভোজ্যতেলের খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা সিন্ডিকেট করে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। তারা চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ করছে না। ফলে খুচরা বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে মূলত হু হু করে দাম বাড়ছে। অলিগলিতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকায় এবং নগরীর বড় বাজারগুলোতে ১৭৫-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত দুই লিটার ৩৬০ টাকা, তিন লিটার ৫৩০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৮৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সরকার নির্ধারিত নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৭৫ টাকায় বিক্রি হবে, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিলো ৮১৮ টাকা। দাম বাড়ানোর পরও স্বাভাবিক হয়নি ভোজ্যতেলের বাজার।
আমদানিকারকরা বলছেন, সরকার দুই দফায় শুল্ক-কর কমিয়েও সুফল মিলছে না। বরং দাম আরও বেড়েছে। একাধিক কারণে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থির। দেশের ডলার সংকট এখনো চলমান রয়েছে। আমদানিকারকরা আগের মতো ভোজ্যতেল আমদানি করছেন না। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। দেশের ইতিহাসে পাম অয়েলের দাম এবারের মতো আর বাড়েনি। মূলত ইন্দোনেশিয়ার উৎপাদন সংকট, বায়োডিজেলে পাম অয়েল ব্যবহারের পরিমাণ ৫ শতাংশ বৃদ্ধিজনিত কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির বুকিং রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে গেছে। এসব কারণে ভোজ্যতেলের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না।
স্বাআলো/এস