জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে প্রতারণা, জালিয়াতি ও তথ্য গোপনের মাধ্যমে কনিষ্ঠ শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তকরণসহ মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু সাঈদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে সাতক্ষীরা বিশেষ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ আব্দুল আলীম আল রাজী শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে, ৩০ অক্টোবর এ মামলায় অপর তিন আসামি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এসএম আবু রায়হান, দর্শন বিভাগের প্রভাষক নাসির আহম্মেদ এবং হিসাব বিজ্ঞানের প্রভাষক অরুণ কুমার সরকারকে কারাগারে পাঠিয়ে ছিলেন আদালত।
প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে চার প্রভাষককে এমপিওভুক্ত করার মাধ্যমে ২০ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা (৩/২০২২) দায়ের করে।
হাল আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা পদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রায় শোনা যায়। কিন্তু বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো এ পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা শোনা যায়নি। এতে অপরাধীরা অপরাধটি করতে উৎসাহিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধা কোথায় তা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।
অভিভাবকরা নিজের আদরের সন্তানটিকে শিক্ষকদের হাতে তুলে দেন শিক্ষা-দীক্ষায় মানুষ করার জন্য। দিনের বেশি ভাগ সময় ওই শিক্ষার্থী তার শিক্ষাগুরুর কাছেই থাকে। আর অভিভাবকরা নিশ্চিন্তে থাকেন বাড়িতে বা কর্মে। একজন আদর্শ শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা আদর্শ মানুষ হবার শিক্ষা পেয়ে দেশ ও জাতি গড়ার কাজে যুক্ত হয়। অতীতে অন্তত তাই দেখা গেছে। কিন্তু সেই শিক্ষকরা যদি অমানুষের মতো কাজ করেন তাহলে তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পাঠিয়ে মানুষ গড়ার স্বপ্ন দেখা যায় না। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু এই সুনাম মনে হয় বেশি দিন থাকবে না। কারণ এক শ্রেণির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন ধরনের অভিযোগ প্রায় শোনা যাচ্ছে। তারা ন্যায় নীতি পদদলিত করে চলেছেন। যারা শিক্ষকতার পেশায় এসে এ পেশাটাকে অপবিত্র করে তুলেছেন তাদেরকে এ অঙ্গন থেকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদায় করে দেয়া ভালো। কারণ তারা যদি আকণ্ঠ অপরাধে নিমজ্জিত থাকেন তাহলে তাদের হাত দিয়ে সুনাগরিক গড়া একেবারে অসম্ভব। আর লেখাপড়া শিখে যদি সুনাগরিক গড়ে না ওঠে তাহলে দেশ পরিচালনার জন্য সৎ নেতৃত্বের মানুষ পাওয়া যাবে না। জাতির জন্য এটা সন্দেহাতীতভাবে অশনিসংকেত।
স্বাআলো/এস