সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের মরাগাং এলাকা থেকে রান্না করা ১০ কেজি হরিণের মাংস ও হরিণ শিকারের বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেছে বনবিভাগের সদস্যরা। ১ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন মরাগাং গ্রাম থেকে এ হরিণের মাংস ও সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
গ্রামের মাহমুদুল হাসানের বাড়ি থেকে হাঁড়ি ও কড়াই ভর্তি রান্না করা ১০ কেজি হরিণের মাংস এবং ৫০টি হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করা হয়। চোরাশিকারি মাহমুদুল হাসানসহ তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়।
সুন্দরবনে হরিণ ধরা নিষেধ। প্রশ্ন জাগে তারপরও শিকারীরা হরিণ ধরতে জাল পাতছে কি করে? তার বাঘ হত্যাও নিষিদ্ধ। হরিণ শিকারীদের রেহাই দেয়া যায় না। কারণ তারা হরিণ শিকার করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাঘ হত্যা করে। দেশের এক শ্রেণির ভোজন রসিকদের লালসা পূরণে শিকারীরা আইন অমান্য করে হরিণ শিকার করে সরবরাহ করে মোটা অংকের টাকা বাগায়। এই বোজন রসিকরাও কম দায়ি নয়। কিন্তু এ পর্যন্ত শিকারীদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ শিকারীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে শোনা যায়নি। শুধু হরিণ নয়, সুন্দরবনের বাঘও শিকার করা হ”েছ অবলিলায়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে বছরে বাঘের মৃত্যুর ঘটনা ছিল একটি করে। চোরা শিকারিদের অস্ত্রের আঘাতে বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে ২০০৪ সালের পায়ের ছাপ গুনে করা জরিপে ৪৪০টি বাঘ থাকার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ক্যামেরা ফাঁদের মাধ্যমে করা জরিপে বাঘের সংখ্যা বেরিয়ে আসে ১০৬টি। এরপর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আরেকটি শুমারি করে জানায়, বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। বাঘ রক্ষার জন্য বন বিভাগকে যেভাবে প্রস্তুত করা দরকার, তা এখনো হয়নি। এ কারণে আদৌ সুন্দরবনে কোনোমতে বাঘগুলো শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না সন্দেহ দেখা দিয়েছে। সরকারের উচিত নিজ উদ্যোগে বাঘের সুরক্ষার উদ্যোগ নেয়া।
প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্য যেন কোনোভাবেই যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকার প্রধানের এ আহবানের প্রতি সবার সচেতন থাকা বাঞ্চনীয়।