সাতক্ষীরার ছয়টি উপজেলায় আর্সেনিক দূষণ বেড়েছে। পানিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ আর্সেনিক মানবদেহের জন্য সহনশীল। কিন্তু এ জেলার অধিকাংশ নলকূপে ৬১ শতাংশ আর্সেনিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
আর্সেনিক দূষণ একটা গুপ্তঘাতক। এ দূষণ এতোটাই মারাত্মক যে দীর্ঘদিন আর্সেনিকযুক্ত পানি ব্যবহার করলে মানবদেহে প্রাণঘাতী ক্যান্সারসহ নানা রোগব্যাধি দেখা দিতে পারে।
সাতক্ষীরায় ভূগর্ভস্থ পানিতে অতিমাত্রার আর্সেনিকের সমস্যা আজকের নয় দুই দশকের পুরনো।
সাতক্ষীরা সদরে ৩৪ শতাংশ, তালায় ৩৫, দেবহাটায় ৩৪, আশাশুনিতে ৪৫ এবং কালীগঞ্জে ২৮ শতাংশ।
হাজার হাজার মানুষ আর্সেনিকের দূষণে আক্রান্ত হয়েছে। গত দেড় বছরে আটজন মারাও গেছে।
এসব তথ্য জনস্বাস্থ্য দফতরের জরিপ জানিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাত্রা অনুযায়ী সমীক্ষা করলে আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
২০২২ সালের এক সমীক্ষার তথ্য জানাচ্ছে, দেশের ৫৪ লাখ ৩০ হাজার ৮৮০টি নলকূপ পরীক্ষা করে সাত লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৮টি নলকূপে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক পাওয়া গেছে। শতাংশের হিসাবে যা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
দেশে আর্সেনিক ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তাই এর সঠিক তথ্য ও উপাত্ত পাওয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট
নীতিনির্ধারকরা তেমন গুরুত্ব দেননি। বরাবরই উপেক্ষিত থেকে গেছে। এ কারণে মানবদেহে মারাত্মক সব রোগের জন্ম হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানির আর্সেনিক দূষণ মানবদেহে ক্যানসার, স্ট্রোক, হৃদরোগের মতো মারাত্মক সব রোগ সৃষ্টি করতে পারে। দেশে এসব রোগ আশঙ্কাহারে বাড়ছে। এসব রোগের সঙ্গে আর্সেনিক দূষণের যোগসূত্র আছে কিনা তাও জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ। এ বিষয়ে এখনই নজর না দিলে দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা মারাত্মক হুমকিতে পড়বে। তাই আর্সেনিক মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোয় দক্ষ পানি-ভূতত্ত্ববিদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর অগভীর নলকূপ ব্যবহারকারীদের যেকোনো পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করতে হবে। সে এলাকার মানুষকে নলকূপের পানির আর্সেনিক নির্ধারণে প্রশিক্ষণ এবং ফিল্টার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি গণসচেতনতা বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
স্বাআলো/এস