জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল: জেলায় শিবাজিত বিশ্বাস (১৫) নামে এক কিশোর খুনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সদরের মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামে কবির খানের মাছের ঘেরের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিবাজিত বিশ্বাস ওই গ্রামের শিপন বিশ্বাসের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার শিবজিত বাড়ি থেকে বের হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয়রা একটি ঘেরের পাশে তার লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
নড়াইলে মোটরসাইকেল ও ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ, স্কুলছাত্র নিহত
জানা গেছে, নিহতের বাবা শিপন বিশ্বাস ও সুশিল বিশ্বাস আপন ভাইরা। তারা বনগ্রামে পাশাপাশি বসবাস করেন। ভাইরার সাথে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় প্রায় দুই বছর আগে সুশিল বিশ্বাস সাড়ে ৭ শতাংশ জমি কবির খানের কাছে বিক্রি করলেও কবির খান আর এস রেকর্ডে (হাল রেকর্ড) কৌশলে সাড়ে ৮ শতাংশ জমি রেকর্ড করে নেয়। শিপন দাসের প্রতিকার চেয়ে আদালতে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে (এলএসটি) মামলা করলে কবির খানের লোকজন মামলা তুলে নেবার জন্যৗ বিভিন্ন সময় শিবাজিতের দাদু পাখি বিশ্বাসসহ পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলো।
নিহতের বাবা সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, খান কবির দীর্ঘ দিন ধরে আমার জমি দখল করার চেষ্টা করছে। কবিরের লোকজন বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি দিয়েছে এবং আমার বাবাকেও মারতে গিয়েছে। কবিরের লোকজন আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার চাই।
নড়াইলে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
এ বিষয়ে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রবিন বিশ্বাস বলেন, সুশান্ত বিশ্বাস ও সুশিল বিশ্বাসের বিরোধপূর্ণ এই জায়গা নিয়ে কয়েকবার শালিস বিচারও করেছি। কিন্তু খান কবির মানেনি। এ নিয়ে এখন আদালতে মামলাও চলছে। লাশের ডান পাশের বুক ও চোখে আঘাতের চিহৃ মনে হয়েছে।
চেয়ারম্যান অভিযোগে বলেন, কবির খান মাঠের ফসলি জমি ক্রয় করলে তার পাশ দিয়ে এমনভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে ঘের কাটে, যাতে পাশ্ববর্তী মালিকের জমি ভেঙ্গে যায় এবং সে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তখন অত্যাচার থেকে বাঁচতে অনেকেই তার কাছে জমি বিক্রি করে দেয়। আবার যদি পরিবারের কোনো ভাই ভারতে থাকে তাহলে কৌশলে তাকে বাংলাদেশে এনে তার ভাগের জমি লিখে নেয়। এভাবে কবির খান মুলিয়া ইউনিয়নে প্রায় ২০০ একর জমির মালিক হয়েছে। এসব কারণে গত দুই বছর আগে নড়াইল শহরের কবির খানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী একটি মানববন্ধনও করে।
নড়াইলের সব আশ্রয়হীন মানুষ ছিন্নমূলের গ্লানিমুক্ত
এ বিষয়ে জানার জন্য কবির খানকে ফোন দিলে তিনি সব মিথ্যা বলে ফোনটি কেটে দেন।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজল বকশী বলেন, লাশের এখনো ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি। হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্বাআলো/এস