ঘূর্ণিঝড় রেমাল: খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে উপকূলের তিন জেলায় ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু এলাকায় পুরোপুরি এবং কিছু এলাকায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধ। এতে বাঁধসংলগ্ন নিচু এলাকা উপচে লোকালয়ে নোনা পানি প্রবেশ করেছে। শত শত গ্রামে চিংড়ির ঘেরসহ ফসলি জমিতে নোনা পানি প্রবেশ করেছে। অসংখ্য ঘেরের চিংড়ি ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খুলনার প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা জানান, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় মোট ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি স্থানে নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খুলনার দাকোপ উপজেলার দুই স্থানে বাঁধ ভেঙেছে।

একটি তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়ার ঢাকি নদীর ডান তীরে। এখানে অন্তত ২০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। একই উপজেলার পানখালী-খলসি এলাকার পশুর নদের ভাঙনে সেখানকার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইকগাছার কামিনীবাসিয়া পুরনো পুলিশ ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ খুব দুর্বল ছিলো। আবার বাঁধ নিচু হওয়ায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে।

ঝড়ের রাতে দাদি-নাতিকে কুপিয়ে হত্যা

স্থানীয়রা বলছে, পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ছয়টি ইউনিয়নের ২১টি স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহেরা নাজনীন জানান, উপজেলায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২১টি স্থানে বাঁধ ভেঙেছে।

বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলাইবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রেণিখালী-দৈবজ্ঞহাটিতে পানগুছি নদীর ভাঙনে বাঁধ ভেঙেছে।

বাগেরহাট সদরের দড়াটানা নদীর ভাঙনে বাঁধ ভেঙেছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরা সার্কেলভুক্ত খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশীর হরিহরপুরে শাখবাড়ী নদীর ভাঙন এবং পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ভদ্রা নদীর ভাঙনে বাঁধ ভেঙেছে।

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব, ২০ হাজার বাড়িঘর বিধস্ত

বাঁধের ভাঙনে খুলনার কয়রা উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়ির ঘের, ভেঙে গেছে কয়েক শ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া রাতজুড়ে ভারি বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার বিপুলসংখ্যক গাছপালা উপড়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রবিবার রাতে জোয়ারের পানির প্রচণ্ড চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোনা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে।

মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, রবিবার রাতের জোয়ারে ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের পানি প্রবেশ করেছে। এতে দুইটি গ্রাম ও কয়েকশো চিংড়িঘের তলিয়ে গেছে।

কয়রার ইউএনও এবিএম তারিক উজ জামান বলেন, কয়েকটি স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। ভারি বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় গাছপালা ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

কার সঙ্গে প্রেম করছেন শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ ইধিকা

প্রথমবারের মতো ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে ‘প্রিয়তমা’...

বাস-সিএনজি ও অটোরিকশার সংঘর্ষ, নিহত ৫

শেরপুরে ভাতশালায় বাস-সিএনজি ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৫ জন...

পুলিশ এখনো থানায় টাকা খাচ্ছে: সারজিস আলম

এখনো পুলিশের অনেক সদস্য দেদারছে ঘুষ গ্রহণ করছেন বলে...

৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরু আজ

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বিপিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ...