জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: বাসার কারেন্ট বিল বাকি এক হাজার ৫০০ টাকা, মেয়ের স্কুলের বেতন বাকি এক হাজার টাকা। অভাব-অনটনের সংসারে দিশেহারা অটোচালক শাহিনুল হক লিটন।
কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়েও ১৮ মে বিকালে নিজের অটো নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়েন হতদরিদ্র লিটন, কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফিরে আসেনি লিটন।
মঙ্গলবার কুষ্টিয়ায় বাইপাস সড়কের পাশে খাল থেকে নিখোঁজের ১১ দিন পর ইজিবাইক চালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লাশটি বাইপাস সড়কের পাশে রোজ হলিডে পার্ক সংলগ্ন খালে ভাসছিলো। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার।
চুয়াডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার
মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, অর্ধগলিত মরদেহটি চেহারা দেখে চেনার উপায় নেই। মরদেহ উদ্ধারের পর তার পরিবারের সদস্যরা পোশাক দেখে শনাক্ত করেছেন।
নিহতের নাম শাহিনুল হক লিটন (৪৭)। তিনি শহরের হাউজিং-এ ব্লক এলাকার মৃত ইজাবুল হকের ছেলে।
ওসি বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহের পরিচয় সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহতের স্ত্রী মনিরা বলেন, নিখোঁজের দিন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল এলাকার দিকে যান লিটন। এরপর থেকে অটোরিকশাসহ তার আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা অটোরিকশা ছিনতাই করতেই তাকে হত্যা করেছে অপরাধীরা। ডিএনএ পরীক্ষার পর ওই নিখোঁজের মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তফা হাবিবুল্লাহ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত লিটনের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে শাহারিয়া হক নীলের বয়স ১৭ বছর ও মেয়ে লামিয়ার বয়স ১৩ বছর। তারা উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করেন। প্রতিদিন লিটন রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসেন। কিন্তু ওই দিন রাত ৩টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় স্ত্রী মনিরা ও ছেলে-মেয়েরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। স্বামী লিটনের মোবাইলে বারবার ফোন দিয়ে বন্ধ পান স্ত্রী মনি। পরদিনও বাবার খোঁজ না পেয়ে মেয়ে লামিয়া অসুস্থ পড়লে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হতদরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পুরো পরিবারটি।
স্বাআলো/এস