চলতি সপ্তাহেই দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে দেশের বাজারে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনা এক লাখ ৫৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনা ৯৫ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনা ৮২ হাজার ২৩১ এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা ৬৮ হাজার ৫৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হয় এক লাখ ৯ হাজার ৭০ টাকা। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা।
তবে, এটিই দেশের বাজারে সোনা বা সোনার গোহনার সর্বোচ্চ দাম নয়। দেশের বাজারে সোনার দাম সর্বোচ্চ ছিলো ২৫ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ছিলো এক লাখ এক হাজার ২৪৪ টাকা। আর এ মানের এক ভরি সোনার গহনা বিক্রি হয় এক লাখ ৯ হাজার ৮০৫ টাকা।
চলতি সপ্তাহেই সোনার এ সর্বোচ্চ দাম ছাড়িয়ে যেতে পারে। আগামী সোমবার (২৩ অক্টোবর) অথবা মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বাজুস থেকে। এ ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো এক ভরি সোনার দাম এক লাখ দুই হাজার টাকা স্পর্শ করতে পারে। সোনার গহনার দাম এক লাখ ১০ হাজার টাকার ওপরে যেতে পারে।
সোনার ভরি লাখ টাকা, রুপার ভরি ১৭১৫
এ বিষয়ে বাজুসের দায়িত্বশীল এক সদস্য জানান, দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণের পর এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্সের দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে। স্থানীয় বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হতে পারে।
চলতি সপ্তাহেই দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়তে পারে এমন আভাস দিয়েছেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ।
তিনি বলেন, আমরা সোনার দাম নির্ধারণ করি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। তবে, বিশ্ববাজারের দামের চিত্রও সে ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে আমাদের স্থানীয় বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বাড়ে।
তিনি আরো বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে চিত্র খেয়াল করেছি। এরই মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৫০ ডলারের মতো বেড়েছে। এর প্রভাবে স্থানীয় বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। আগামীকাল রবিবার (২২ অক্টোবর) দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। আমরা সোমবার বৈঠকে বসার চেষ্টা করবো। বৈঠক করেই সোনার দামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের প্রতি দিনই বেড়েছে সোনার দাম। এতে এক সপ্তাহেই প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৪৮ দশমিক ৯৩ ডলার বা ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো এক হাজার ৯৩২ দশমিক ৫০ ডলার। সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে এক হাজার ৯৮১ দশমিক ৪৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
দেশের বাজারে সর্বশেষ যখন সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো এক হাজার ৯৩২ দশমিক ৫০ ডলার। অর্থাৎ দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণের পর এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৪৮ দশমিক ৯৩ ডলার।
স্বাআলো/এসএস