হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর: রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলুর চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে আলু তোলার ধুম পড়েছে। গ্রামগঞ্জ সবখানেই প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে আলু তোলার কাজ।
চাষীরা জমি থেকে আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে অনেক চাষী তাদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও নিকট আত্মীয়-স্বজনদের আলু কাজে লাগিয়েছেন। এই কাজে শিশুরাও পিছিয়ে নেই।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে বুধবার পর্যন্ত রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলু উত্তোলনের পরিমাণ ৪৮ হাজার ৮৪৬ মেট্রিক টন। এসব আলুর মধ্যে রয়েছে উফশী ও স্থানীয় জাত। বাকি আলু মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে উত্তোলন করা হবে। তবে এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।
এদিকে চলতি মৌসুমে পূরুষ শ্রমিকের চেয়ে নারি শ্রমিকদের বেশি কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। তারা পূরুষের তুলনায় কম পারিশ্রমিক পান। তারা পারিশ্রমিক হিসেবে পাচ্ছেন ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা বলে জানান। তবে এবার আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রংপুর মহানগরীসহ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এ বছর চলতি মৌসুমে এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। এ বছর রংপুর অঞ্চলে ৯৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সে হিসেবে দুই হাজার ৯২ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ বেড়েছে। গত বছর রংপুর অঞ্চলে ৯৭ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছিলো।
কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদফতর রংপুর আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় গতবারের চেয়ে এবার তিন হাজার ২৭৫ হেক্টর বেশি জমিতে স্থানীয় ও উফশী জাতের আলুর চাষ করা হয়েছে। যার পরিমাণ এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমি। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত রংপুরে ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমি থেকে আলু তোলা হয়। হেক্টর প্রতি গড় ফলনের হার উফশী ২৯ দশমিক ৪৫ ও স্থানীয় ১১ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন।
কৃষকরা জানান, এবার অনেকেই নিজস্ব বীজ দিয়ে আলু চাষ করায় উৎপাদন কম হয়েছে। সব মিলে একর প্রতি তার খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। এবার প্রতি একরে গড় ফলন পেয়েছেন প্রায় ১০০ বস্তা। তবে উন্নত বীজ হলে উৎপাদন বেশি হতো।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, রংপুর অঞ্চল আলুর জন্য বিখ্যাত। গত বছর রংপুর মহানগরীসহ অঞ্চলের পাঁচ জেলায় আলুর মোট উৎপাদন হয়েছিলো ২৭ লাখ ৩২ হাজার ১৫৪ মেট্রিক টন। এবার উৎপাদন লক্ষ্য ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন
স্বাআলো/এস