ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের আলোচিত নায়িকা নাজনীন আক্তার হ্যাপি তার দাম্পত্য জীবন নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন। স্বামী মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন ও একাধিক বিয়েসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন এবং তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন তিনি। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে হ্যাপি এবার দেশের আলেম-ওলামাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
প্রায় এক যুগ আগে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে আলোচনায় এসেছিলেন নাজনীন আক্তার হ্যাপি। পরবর্তীতে রুপালি জগত ছেড়ে তিনি ইসলামি জীবনযাপন শুরু করেন এবং মুফতি মোহাম্মদ তালহা নামে একজন মাদরাসা শিক্ষককে বিয়ে করেন। অনেক দিন ধরেই তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছে না।
সম্প্রতি হ্যাপি তার স্বামী তালহার বিরুদ্ধে মারধর, ৯টি বিয়ে করাসহ নানা গুরুতর অভিযোগ তোলেন। কেবল তাই নয়, বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। গত ১২ মে হ্যাপি তার স্বামী মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। গত ১৪ মে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে হ্যাপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস মামলার বিষয়টি জানান। হ্যাপি তার স্বামীর ৯ জন স্ত্রীর নাম-ঠিকানাসহ বিয়ের কাগজপত্রও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
মাদক সেবন করে গৃহকর্মীকে নির্যাতন, পরীমনির বিরুদ্ধে মামলা
বর্তমানে কঠিন সময় পার করছেন হ্যাপি, যার ইঙ্গিত মেলে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসে। গত শুক্রবার (২৩ মে) তিনি তার ফেসবুক আইডিতে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে দেশের ‘হক্কানী ওলামা’দের কাছে সাহায্য চেয়েছেন।
হ্যাপি লিখেছেন, এই দেশে কি কোনো হক্কানী ওলামা নেই? আমাকে এই আলিম নামের জালিম থেকে আল্লাহর ওয়াস্তে বাঁচান! আগে অনুরোধ করেছি, এখনো অনুরোধ করছি। আপনারা সবাই কেন চুপ করে আছেন? আমি যে মাজলুম এটা কেন মানছেন না? আমার অতীতের কারণে? যা তওবাকৃত। আপনারা কিছুই করতে পারছেন না?
নিজের অতীত নিয়ে কটাক্ষ করার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমাকে মুক্ত করে দিন দয়া করে। সে আমাকে ঝুলিয়ে রাখতে রাখতে আমাকে এই অবস্থায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। আপনাদের একজন আলেমের কুকর্ম ঢাকার জন্য কটাক্ষ করছেন, আমার অতীত নিয়ে। আল্লাহর সামনে হিসাব দিতে পারবেন? কোনো দায়িত্ব ছিলো না আপনাদের? এগুলো যা আজকে নতুন না, আমি অনেকদিন ধরে এগুলো বলে আসছি। মামলা করার আগে থেকে।
বিয়ে করতে যাচ্ছেন সিদ্দিকের প্রাক্তন স্ত্রী মিম
মামলার ধরন নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা থাকায় হ্যাপি নিজেও অন্য একটি পোস্টে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি জানান, তার স্বামী তার রেস্টুরেন্টের নতুন শাখা খোলার জন্য তার কাছে টাকা দাবি করেন এবং না দিলে তালাক দেওয়ার হুমকি দেন। আইনের ভাষায় অর্থ দাবি করাটাই এখানে যৌতুক হিসেবে গণ্য হয়েছে। তবে মামলার মূল কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, তালাকের পর তার স্বামী তাদের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারেন এই ভয়েই তিনি এই ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি তার সন্তানের নিরাপত্তার জন্যই এসব হুমকি সহ্য করছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিল নাজনীন আক্তার হ্যাপির। এছাড়াও তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রে এবং বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন।
স্বাআলো/এস
