সম্পদকীয়: দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে চাঁইজাল, চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল উদ্ধারে মৎস্য বিভাগের অভিযান চলছে। গত বছরের শেষের দিকে যশোরের ঝিকরগাছারকপোতাক্ষ দন থেকে চায়না দুয়ারি জাল উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভোলার মনপুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে নিষিদ্ধ চাঁইজাল উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা- কর্মচারী। ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও আসামিরা চিহ্নিত হওয়া সত্তে¡ও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এসব জাল দিয়ে নদের ছোট মাছ শিকার করা হয়। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, চাঁইজাল, কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে মাছসহ জলজ প্রাণ-প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়বে। অতীতেও দেশে কারন্টে জালের ব্যবহার হতে দেখা গেছে। এখন দেশের সব অঞ্চলেই মৎস্যসম্পদের জন্য ক্ষতিকর এ জাল ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু মেঘনা ও কপোতাক্ষে নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায়ই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের খবর গণমাধ্যমে পাওয়া যায়।
মৎস্য অধিদফরের সূত্র অনুযায়ী, দেশে মাছ ধরার জালের ফাঁসের অনুমোদিত পরিমাপ সাড়ে পাঁচ সেন্টিমিটার (সংশোধিত আইন)। জালের ফাঁস এর চেয়ে কম হলে তা আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। তাই এ ধরনের জাল ব্যবহার করার কোন সুযোগ নেই। আইনে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও দেশে অবাধে এ ধরনের জাল ব্যবহার করা হচ্ছে।
কম পরিশ্রমে বেশি মাছ ধরতে পারায় চাঁইজাল, কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি জাল জেলেদের কাছে জনটিপ্রয়। তাদের ভাষ্য, অল্প পুঁজিতে এসব জাল দিয়ে অনেক মাছ পাওয়া যায়।
মৎস্য গবেষকদের মতে, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ব্যাপক ক্ষতি ডেকে আনছে কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারি জাল। কোনো মাছ বা জলজ প্রাণী এই জালে একবার ধরা পড়লে আর বের হতে পারে না, তাই অনেক বিপন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী মারা পড়ে। সেগুলোর বংশবৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটে।
নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো জেলেদের বোঝাতে হবে। সামান্য লাভের জন্য জলজ পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করা কাম্য নয়। মৎসসম্পদ বিপন্ন হলে জেলেরাও একসময় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্বাআলো/এস