রংপুর ব্যুরো: রংপুরের মাহিগঞ্জ ডিমলা কানুনগোটলা এলাকায় শাশুড়ির বাসা থেকে সোনা, নগদ অর্থ চুরি করার অভিযোগে আহসান হাবীব সুমন নামের এক মেয়ে জামাই দুই মাস কারাবাস থাকার পর জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে এসেই শাশুড়িকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
হুমকির ঘটনায় শাশুড়ি রাশেদা বেগম রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় একটি জিডি করেছেন।
এছাড়াও রাশেদা বেগম বাদী হয়ে ছোট মেয়ে জামাই আহসান হাবীব এবং মেয়ে জান্নাতুল কাওছার জুথিকে আসামি করে রংপুরের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গত ২ মার্চ রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ জেবিসেন রোড কানুনগোটলা এলাকার রাশেদা বেগমের নিজ বাসায় একটি চুরির ঘটনা ঘটে। চোররা সোনার গহনা ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির ঘটনায় রাশেদা বেগম বাদী হয়ে সর্বমোট ২৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা দাবি করে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর রাশেদা বেগমের ছোট মেয়ে জামাই আহসান হাবীব সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রাশেদা বেগমের ছোট মেয়ে জামাই আহসান হাবীব সুমনকে তাজহাট থানা পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে জানায়, নগরীর ডিমলা এলাকার ইউসুফ আলীর মাধ্যমে নগরীর মাহিগঞ্জ বাজার এলাকার তালাচাবি মেকার আব্দুল জব্বার ও সিটি বাজারের তালাচাবি মেকার আলমনগর কলোনীর বাসিন্দা আরমান আলী তাকে চাবি তৈরি করে দিয়ে চুরিতে সহায়তা করে। পরে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে নিলে তারা ১৬৪ ধারায় সুমনের বিপক্ষে জবানবন্দি দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সুমনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আহসান হাবীব সুমনের শাশুড়ি রাশেদা বেগম বলেন, সুমন একজন প্রকৃত চোর। একেক জায়গায় চুরি করার পর ধরা পড়ার আগেই বাসা পরিবর্তন করা তার অভ্যাস। এইচএসসি পাস হলেও নিজেকে এমবিএ ডিগ্রিধারী পরিচয় দিতেন সুমন। যদিও এমবিএ ডিগ্রির সার্টিফিকেট তিনি পুলিশকে দেখাতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, কষ্টার্জিত নগদ অর্থ এবং সোনার গহনা নিয়ে গেছে সুমন। আমার মেজো জামাই রেজাউল কবির রাসেলকে সাজানো মামলা দিয়ে প্রাণনাশের হুমকিসহ হয়রানি করছে সুমন।
তিনি আরো বলেন, আমি এবং আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি এ ঘটনায় ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।
সুমনের পরিবারের অন্য সদস্যরা জানিয়েছেন, অতীতে চাচী এবং ফুফুর বাসায়ও চুরির অভিযোগ আছে আহসান হাবীব সুমনের বিরুদ্ধে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও তার চলাফেরা খুব আলিশান। তার ব্যবহার করা প্রাইভেটকারটি চুরি করা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এই গাড়ি কয়েক মাস আগে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা পুলিশ আটক করেছিলো। ওই সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুলিশকে হুমকি দেয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে বর্তমানে এই মামলাটি তদন্ত করছে রংপুর মহানগর গেয়েন্দা পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সবুর জানিয়েছেন, চোরাই সোনা যাতে সুমন বিক্রি করতে না পারেন সেজন্য তারা তৎপর আছেন।
অভিযুক্ত আহসান হাবীব সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার নিযুক্ত উকিলের মতামত ছাড়া মন্তব্য করছে রাজি হয়নি।
তাজহাট মেট্রোপলিটন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, হুমকির ঘটনায় ভুক্তভোগী শাশুড়ি রাশেদা বেগম থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বাআলো/এস