সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ৩০ বছর করাসহ ৮ দফা দাবিতে ডাকা দেশব্যাপী ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠকের পর রোববার (১০ আগস্ট) রাতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে বাস, ট্রাকসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ফলে এই অচলাবস্থার আশঙ্কা দূর হলো।
রোববার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। দীর্ঘ আলোচনার পর সরকারের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো পূরণের জন্য প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ধর্মঘট প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহছানুল হক, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলমসহ বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
পরিবহন খাতের প্রধান দাবিগুলো হলো:
১. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ ধারাসহ কয়েকটি বিতর্কিত ধারা সংশোধন।
২. বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০-২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা।
৩. সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে বিআরটিএর অভিযান বন্ধ রাখা।
৪. বাজেটে আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর কমিয়ে আগের মতো করা।
৫. দুর্ঘটনায় আটক গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়া।
৬. মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন।
৭. মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও অনুমোদনহীন হালকা যানবাহনের জন্য পৃথক লেন তৈরি।
এর আগে গত ২৭ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির
মহাসচিব সাইফুল আলম ১১ আগস্টের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১২ আগস্ট থেকে ধর্মঘট শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
স্বাআলো/এস