জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: জেলার জীবননগর উপজেলার রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান মিলে ওই বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে থাকা ৩৭টি মেহগনি গাছ অবৈধভাবে কেটে বিক্রির পাঁয়তারা করেছেন।
অভিযোগ পেয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করেছেন এবং জব্দকৃত গাছ রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা তাহাজ্জত হোসেনের কাছে জিম্মায় রেখেছেন।
একই সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব ১০ কাঠা জমিতে ৩৭টি মেহগনি গাছ ছিলো। ওই গাছগুলোর উপর নজর পড়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমানের। তারা দুইজনে মিলে ঈদের ছুটির ভেতর বিক্রির উদ্দেশ্যে গোপনে গাছগুলো কাটেন। ঈদের তিনদিন আগে গাছগুলো কাটার সময় গ্রামবাসী বাধাও দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গ্রামবাসী জানায়, অবৈধভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে শুধু একটা রেজুলেশন করা হয়েছে। বিধি মোতাবেক অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটতে পারেন কি না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিদ্যালয়ের ফার্নিচার করার জন্য রেজুলেশন করে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জ্জা তাহাজ্জত হোসেন বলেন, গাছগুলো কাটার ব্যাপারে কোনো নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফার্নিচার তৈরির অজুহাত তুলে যে গাছগুলো কাটা হয়েছে তা একেবারে নিয়ম বহির্ভূত। অবৈধভাবে গাছগুলো কেটে এখন খোড়া যুক্তি দেখানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে গাছগুলো কাটা হয়েছে তা দিয়ে চেয়ার, বেঞ্চ বা টেবিল তৈরি করা সম্ভব না। নিশ্চয় কর্তৃপক্ষের অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। সুষ্ট তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ বলেন, কোনো বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে হলে প্রথমে নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ একটা রেজুলেশন করবেন। এরপর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটা আবেদন করবেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়ার পর ওই কমিটি নিয়ম অনুযায়ী গাছ টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অথবা নিলামে বিক্রি করবেন। কিন্তু রায়পুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার ব্যাপারে নিয়ম নীতির কোনো তোয়াক্কা করা হয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার বিকেলে কর্তনকৃত গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী গাছগুলো না কাটায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিশের জবাব পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্বাআলো/এস