হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর জন্য লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের টার্ন টেবিলটি পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় উল্টোদিকেই গাড়ি চালাতে হচ্ছে চালকদের। ফলে একদিকে চলার কারণে চাকার ক্ষয় হচ্ছে। আর চালকও পিছনে বসে ট্রেন চালাচ্ছে। তাই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
তবে টার্ন টেবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ৩০ বছর পর লালমনিরহাট রেলওয়ে যন্ত্র প্রকৌশল অধিদফতরের উদ্যোগে টার্ন টেবিলটি নির্মাণ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। উদ্বোধন হলে ঝুকি নিয়ে আর উল্টোদিকে ট্রেন চালাতে হবে না চালকদের। এতে কমবে চাকার ক্ষয়রোধ আর রেল দুর্ঘটনাও। রেল ভ্রমণ হবে আরো গতিশীল আর নিরাপদ।
রেলওয়ে সূ্ত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে ১৮৬২ সালে লালমনিরহাটে নির্মিত হয় টার্ন টেবিল। যা দীর্ঘ সময় সচল ছিলো।রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘুরানোর জন্য লালমনিরহাটের টার্ন টেবিলটি ১৯৯৩ সালের দিকে নষ্ট হয়ে যায়।কালের গর্ভে যা এখন বিলীন। বৃটিশরা এটির নকশা ও নির্মান কৌশল সরিয়ে ফেলায় বাংলাদেশে আর কোন টার্ণ টেবিল নির্মিত হয়নি।টার্ন টেবিল না থাকায় ইঞ্জিন না ঘুরিয়ে উল্টোভাবে ট্রেন চালানো হচ্ছে।ফলে চালক ইঞ্জিনের পিছনের দিকে বসায় আঁকাবাকা রেললাইনে চালকদের দেখতে অসুবিধা হয়।এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তাছাড়াও একদিকে চলাচলের কারণে ঘর্ষনে ক্ষয় হচ্ছে চাকাগুলো। এতে বাড়ছে দুর্ঘটনা। তাই এ সমস্যা সমাধানে দেশের এই প্রথম লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ নিজ প্রযুক্তিতে স্বল্প খরচে রেলের অব্যবহৃত যন্ত্রাংশ দিয়ে লালমনিরহাটে নির্মাণ করেছে টার্ন টেবিল।
লালমনিরহাট বৃষ্টি কামনায় সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায়
এখন শুধু রেললাইন সংযোগের অপেক্ষা। এটি চালু হলে দেশের মধ্যে হবে এই প্রথম নির্মিত টার্ন টেবিল। লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ থেকে প্রতিদিন ১১টি ট্রেন ঢাকা, টাঙ্গাইল, গাইবান্ধা, বোনারপাড়া, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর সহ ২৮টি রেল ষ্টেশনে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। এটি চালু হলে ইঞ্জিন সোজাভাবে চলবে।এতে চালকদের সুবিধার পাশাপাশি চাকার ক্ষয়রোধ হবে।
ট্রেন চালক জহুরুল ইসলাম জানান, ইঞ্জিন ঘোরানোর ব্যবস্থা না থাকায় ওল্টোভাবেই ট্রেন চালাতে হয়। এতে অনেক সময় বাঁকা রেললাইনে সিগনাল চোখে পড়েনা। আর ইঞ্জিন ঘুরিয়ে সামনের দিকে চালক থাকলে গাড়ী চালাতে সুবিধা হয়। টার্ন টেবিল নির্মাণের ফলে এ সমস্যার সমাধান হলো।
টার্ন টেবিল তৈরির উদ্যোক্তা লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু বলেন,দেশে এই প্রথম দেশীয় যন্ত্রাংশ দিয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইঞ্জিন ও কোচ সহজেই ঘোরানো যাবে। স্বল্প ব্যায়ে আর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ টার্ন টেবিলটি নির্মাণ করেছি। এতে যেমন চাকার ক্ষয়রোধ হবে তেমন চালককে আর পেছনে বসে ট্রেন চালাতে হবেনা। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে যাবে।
স্বাআলো/এস