উচ্চ আদালতের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব ইশরাক হোসেনকে বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তার সমর্থকেরা।
এই কর্মসূচির তৃতীয় দিন শনিবার (১৭ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন এলাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভকালে ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তার সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। একই সাথে তারা হুঁশিয়ারি দেন যে, এই দুই কর্মকর্তাকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। ইশরাক সমর্থকেরা আরও জানান, তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি আগামীকাল রবিবারও চলমান থাকবে।
‘ঢাকাবাসী’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এই প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান। সাংবাদিকদের মশিউর রহমান বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তার সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে নগর ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাশাপাশি তাদের প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি পুনর্ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ডিএসসিসি নগর ভবন এলাকাতেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী দফতর রয়েছে এবং এখানেই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার দাপ্তরিক কাজ করেন। তবে ইশরাক অনুসারীদের টানা বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির কারণে শনিবার নগর ভবনে আসেননি উপদেষ্টা আসিফ।
ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এই ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন ২০২০ সালের ৩ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানির পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন গত ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেটও প্রকাশ করে। তবে আদালতের রায় ও ইসির গেজেট অনুযায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ বা দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা নিয়ে এই অসন্তোষ ও বিক্ষোভ।
স্বাআলো/এস