Uncategorized

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে: আকাশসীমা বন্ধ করলো ভারত, যুদ্ধের হুঁশিয়ারি

| May 1, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে, সীমান্তে গুলি বিনিময়ের ঘটনা থামছে না। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার ভারত সরকার পাকিস্তানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা সামরিক বিমানের পাশাপাশি পাকিস্তান রেজিস্টার্ড, পরিচালিত বা লিজ নেওয়া বাণিজ্যিক বিমানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

ভারতের ঘোষণা অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু করে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত পাকিস্তানের কোনো বিমান ভারতের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে পাকিস্তানের পূর্ববর্তী পদক্ষেপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন। এর আগে পহেলগাম (সম্ভবত পুলওয়ামা বোঝানো হয়েছে) হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতের এই নতুন সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে’

এদিকে, সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২৯-৩০ এপ্রিল রাতে পাকিস্তানি সেনারা জম্মু ও কাশ্মীরের নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরের বিপরীতে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিনা প্ররোচনায় ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এর দ্রুত এবং আনুপাতিক জবাব দিয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

তবে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ তাদের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে ভিন্ন দাবি করেছে। তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট ও বাঙ্কার ধ্বংস হয়েছে। তাদের মতে, ভারতীয় সেনারা বিনা উসকানিতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করলে পাকিস্তানি বাহিনী পাল্টা জবাব দেয়।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেছেন, তাদের কাছে নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পহেলগাম হামলার প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ‘সম্পূর্ণ অপারেশনাল স্বাধীনতা’ দেওয়ার ঘোষণা দেন।

৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে আক্রমণ করবে ভারত!

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের স্বঘোষিত বাদী, বিচারক ও শাস্তিদাতা হিসেবে ভারত যে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে, তা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান নিজেই গত দুই দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং বিশ্বব্যাপী যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা জানায়।

তারা আরো জানান, পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তান নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দিলেও ভারত সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে, যার পরিণতি পুরো অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভারতের যেকোনো সামরিক আগ্রাসনের অবধারিত জবাব দেবে পাকিস্তান এবং সম্ভাব্য যুদ্ধের সম্পূর্ণ দায়ভার ভারতের ওপর বর্তাবে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবগত করেন।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির আগ্রাসন ভারতীয় শত্রুতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। মঙ্গলবার আদিয়ালা কারাগারে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি মোদির ‘যুদ্ধ-প্ররোচনা’র তীব্র নিন্দা জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পোস্ট অনুসারে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করলেও জাতি হিসেবে পাকিস্তানিরা ঐক্যবদ্ধ এবং মোদির বিপজ্জনক উচ্চাকাঙ্ক্ষার নিন্দা জানায়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একটি অবৈধ সরকারের কারণে জাতি বিভক্ত হলেও মোদির আগ্রাসন জনগণকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা প্রশমনে উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (উল্লেখ্য, মার্কো রুবিও মার্কিন সিনেটর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নন, তবে সংবাদে এভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে) পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন।

তথ্যসূত্র: ডন ও এনডিটিভি

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo