যশোরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর, স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে ডাক্তার স্ত্রীকে মারধরের ঘটনায় মৎস্য অফিসার কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সদর উপজেলার বারীনগর গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে ডাক্তার উম্মে হাবিবা যশোর আদালতে এই মামলাটি করেছেন।

বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আদেশ দিয়েছেন।

আসামি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা মৎস্য অফিসার এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খোর্দ্দ গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে তারেক আজিজ।

যশোরে যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

বাদী মামলায় জানিয়েছেন, তিনি ঢাকার সলিমুল্যাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারী পাস করে বর্তমানে সেখানেই ইন্টার্ন করছেন। পাশাপাশি আসামি তারেক আজিজ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা মৎস্য অফিসার পদে চাকরিত আছেন। পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আসামি তারেক আজিজের সাথে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্যে বাদীর বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বিয়ের সময়ই বাদীর পিতার কাছে আসামি ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেছিলেন। ওই যৌতুক দিতে পারবেন না এবং ওই আসামির সাথে মেয়েটি বিয়ে দিবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তার উম্মে হাবিবার পিতা। কিন্তু ধুরন্দর আসামি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই আবার ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য তারেক আজিজ প্রায়ই সময় ডাক্তার উম্মে হাবিবাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। কিন্তু পিতার আর্থিক অসচ্ছলতার কথা ভেবে ডাক্তার হাবিবা নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর সংসার করতে থাকেন। ২০২৩ সালের ২৩ জুন আবারো ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে ডাক্তার হাবিবার উপর নির্যাতন করে তার পিতার বাড়িতে তাড়িয়ে দেন তারেক আজিজ। দীর্ঘদিন পিতার বাড়িতে অবস্থান করার পরও তারেক আজিজ স্ত্রীর কোনো খোঁজখবর নেননি। ফলে তারেক আজিজকে গত ১২ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে ডাক্তার হাবিবার পিতার বাড়িতে ডেকে আনা হয়। এসময় উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে যৌতুক ছাড়া ডাক্তার হাবিবাকে নিয়ে সংসার করার জন্য তারেক আজিজকে অনুরোধ করা হয়। এসময় যৌতুক ছাড়া ডাক্তার হাবিবাকে নিয়ে সংসার করবেন না এবং বেশি যৌতুক নিয়ে অন্যাত্র দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার করবেন বলে হুমকি দিয়ে চলে যান তারেক আজিজ। ফলে কোনো উপায়ন্ত না পেয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে আদালতে এই মামলাটি করেছেন ডাক্তার হাবিবা। বিচারক মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আদেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী ডাক্তার উম্মে হাবিবা বলেছেন, বিয়ের পর থেকেই ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নিয়াতন করে আসছিলেন তার স্বামী তাকের আজিজ। বিষয়টি তার পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে জানানো হলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় আদালতে এই মামলা করা হয়েছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

টোলপ্লাজায় নিহত ৬: সেই বাস চালক গ্রেফতার

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায়...

পটুয়াখালীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: মহান ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে...

কেউ যেনো মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: জামায়াতে আমির

ছাত্রদের স্যালুট জানানোর ইচ্ছা পোষণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর...

নড়াইলে ইউপি সদস্যকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা

নড়াইলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারী (৫০) ইউপি সদস্যের মৃত্যু...