নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে যৌতুক দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী আনিসুর রহমান রিমন ওরফে সাগরকে মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত।
একই সাথে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বাবা কেশবপুর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মোস্তফা দফতরি ও মা নাসিমা বেগমকে খালাস দেয়া হয়েছে।
রবিবার (৭ জুলাই) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এই রায় দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি সেতারা খাতুন।
নিহত মেরিনা খাতুন একই উপজেলার গড়ভাঙ্গা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের মেয়ে।
মামলা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে রিপনের সাথে মেরিনার বিয়ে হয়। কিন্তু বিষয়টি পারিবারিকভাবে ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকতা করা হয়। বিয়ের সময় রিপনকে নগদ চার লাখ টাকা দেয় মেরিনার পরিবার। এর কয়েক দিনের মাথায় ফের দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে রিপনসহ তার পরিবারের সদস্যরা। টাকা না দেয়ায় মেরিনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে রিমন।
একপর্যায় ২০২২ সালের ৩ মে ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে রিপন নেশা করে বাড়িতে এসে ওই দুই লাখ টাকার জন্য মেরিনাকে চাপ দিতে থাকে। টাকা না দেয়ায় মেরিনাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে নেয়া হয় কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অবস্থার অবনতি হলে মেরিনাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আটদিনের মাথায় ১১ মে দুপুরে মেরিনা মারা যান। এরপরই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তার স্বামী রিপন।
এদিকে, এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রিপন, তার বাবা মোস্তফা দফতরি ও মা নাসিমা এবং খালাতো ভাই পাজিয়া গ্রামের আল আমিন ও রিপনের চাচা সাহেব আলীসহ পাঁচজনকে আসামি দিয়ে মামলা করেন। মামলার পর রিপন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ মামলাটি তদন্ত করে কেশবপুর থানার এসআই লিখন কুমার সরকার চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই সাথে আসামি আল আমিনকে অব্যাহতির আবেদন জানান। বিচারক চার্জগঠনের সময় এ মামলার দুই আসামি সাহেব আলী ও আল আমিনকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ৭ জুলাই বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে রিপনকে ফাসির আদেশ ও তার বাবা-মাকে খালাস প্রদান করেন।
স্বাআলো/এস