আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে নতুন শিক্ষাবর্ষের জন্য পুনরায় স্কুল খুলেছে তালেবান সরকার। বুধবার থেকে দেশটিতে স্কুল চালু হলেও টানা তৃতীয় বছরের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। খবর এএফপির।
২০২১ সালে ক্ষমতায় আসা তালেবান সরকার জাতিসংঘের ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ প্রস্তাবনা বাতিল করে কঠোর ইসলামি অনুশাসন আরোপ করে। এ ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে নারীদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করে তালেবান।
বুধবার সকালে ইউনিফর্ম পরা ছেলেরা তালেবানের সাদা-কালো রঙের পতাকা হাতে কাবুলের আমানি স্কুলের প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে ছিল। স্থানীয় কর্মকর্তারা নতুন শিক্ষাবর্ষের আনুষ্ঠানিক শুরুতে এখানে উপস্থিত ছিলেন।
ছেলেরা দলবেঁধে স্কুলে আসলেও মেয়ে হওয়ার কারণে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে ১৮ বছর বয়সী জুহাল শিরজাদকে। স্কুলের ঘণ্টা যখন বেজে উঠে তখন নিজের বাড়িতেই ছিলেন কাবুলের এই বাসিন্দা।
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘প্রতি বছর যখন আমার ভাই স্কুলে যেতেন, আমার খুব হতাশ লাগতো। আমি তার জন্য খুশি কিন্তু নিজেকে নিয়ে দুঃখী ছিলাম। এই শীতে, আমার ভাই পড়াশোনা করছিলো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি হতাশ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, যদি আমাকে স্কুলে যেতে দেয়া হত, আমিও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারতাম।
আফগানিস্তানই একমাত্র দেশ যেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হেরাতের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরের বাসিন্দা ১৮ বছর বয়সী আসমা আলকোজাই বলেন, আমার মতো মেয়েরা কেউই শিক্ষা ও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না। ছেলেরা চালিয়ে যেতে পারে। এটা খুবই দুঃখজনক।
ইংল্যান্ডের দম্ভ চূর্ণ করলো আফগানিস্তান
তিনি এএফপিকে বলেন, সমাজে যখন শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা থাকে, তখন এই ধরনের সমাজ কখনোই উন্নতি করতে পারে না।
বিধিনিষেধের প্রতিক্রিয়ায় অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে কিন্তু কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের অভাব, সেইসঙ্গে স্ক্রিনের মাধ্যমে শেখার পরিবেশ তাদের ব্যক্তিগত শিক্ষার একটি দুর্বল বিকল্প বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
স্বাআলো/এস