যশোরকে মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং মুক্ত করতে চাই: এসপি মাসুদ আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ আলম বলেছেন, যশোরের মানুষকে ভালো রাখার জন্য আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক বন্ধন জোরদার করতে হবে। সামাজিক বন্ধন জোরদার থাকলে সমাজ থেকে সহজেই অপরাধ কমে যাবে। প্রতিটি কাজ জবাবদিহিতা, ন্যায়, নিষ্ঠতার সাথে করলে ভুল কম হয়। পুলিশ সুপার হিসেবে চাকরিটা আমার কাছে ইবাদত। ঈমানি দায়িত্ব নিয়ে যশোরবাসীর সেবা দিয়ে যাবো। শতভাগ শুদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সবাইকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

বুধবার (১০ জুলাই) তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় নবাগত পুলিশ মাসুদ আলম বলেন, এই জেলায় তিনি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জেলার সাধারণ মানুষের সাথে কোনো প্রকৃতির আচরণ ও সহযোগিতা প্রদান করেন তার জানার প্রয়াস নিয়েই ছদ্মবেশে সকল প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করে দেখেছেন, কিছু প্রতিষ্ঠানে সেবা প্রদানে ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা রয়েছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান ভালো কাজ করছে। এসময় তিনি আবারো বলেন, যশোরের সমস্যা হিসেবে সন্ত্রাস, মাদক, চোরাকারবার ও যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন বলে জানান।

তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকরা হলেন সমাজের আয়না। পুলিশ ও সাংবাদিক একে অপরের সহায়ক। আমরা যশোরকে শান্তি ও স্বস্তির জেলায় পরিণত করতে পারি, যদি আপনারা আমাদের সহায়তা করেন। সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেলে যশোরকে মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং মুক্ত করা সম্ভব। পুলিশ সুপার মাসুদ আলম গত ৮ জুলাই যশোরে যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি মাদারীপুরে দায়িত্ব পালন করেন।

যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম প্রথম কর্ম দিবসে নিজের পরিচয় গোপন করে পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন শাখার অবস্থা খোঁজ খবর নিতে গিয়ে যশোরবাসীকে অবাক করে দিয়েছেন, তেমনি নিজেও বিস্মিত হয়েছেন। তবে এসময় তিনি কোন কোন দফতরে কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের সন্তুষ্ট হয়েছেন। আবার কোনো দফতরে কর্মকর্তা না পেয়ে ও সেখানকার কার্যক্রমে অসন্তুষ্ট হয়েছেন।

পুলিশ সুপার যশোরে যোগদান করেই নিজে বাইসাইকেল চালিয়ে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় যান। বাংলোর গার্ড তাকে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ঢুকতে দেননি। পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন জেল রোড ট্রাফিক অফিসে। এখানে তিনি কাউকে না পেয়ে চলে যান। সরাসরি চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে, সেখানে পুলিশ ফাঁড়ির গেটে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে গেট ঝাকাঝাকি করেন। কিন্তু কেউ গেট খুলতে আসেননি। এরপর তিনি যান কোতোয়ালী মডেল থানায়। সেখানে তিনি পরিচয় গোপন রেখে কোতোয়ালী মডেল থানায় ডিউটি অফিস রুমে ঢুকেন। মোবাইল হারিয়ে গেছে জানিয়ে ডিউটি অফিসারের কাছে জিডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ডিউটি অফিসার একজনকে দেখিয়ে দিয়ে বলেন, জিডি করতে হলে ৫০০ টাকা লাগবে।

মোটরসাইকেলে চলে যান পুলিশ লাইনে। গেটে কর্মরত কনস্টেবল তাকে দাঁড় করান এবং ব্যারাকে কার সাথে দেখা করবেন তা জানতে চান। তখন ছদ্দবেশী পুলিশ সুপার ওই কনস্টেবলকে বলেন, ব্যারাকে কামাল নামে এক বন্ধু আছে। তার সাথে দেখা করতে চাই। তখন কনস্টেবল গার্ড তাকে ভিতরে যাওয়ার পারমিশন দেয়। কনস্টেবলদের ব্যারাকে তিনতলায় যেয়ে খিচুড়ি খান এবং অনেকের সাথে আলাপ করেন।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

বিএসপির সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ (বিএসপি) যশোর এর ২৪৫...

ফের পরীর সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন রাজের

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি ও নায়ক শরিফুল রাজের...

বেনাপোল কাস্টমসের অভিযানে অবৈধ পণ্যর ট্রাক আটক

মিলন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: বেনাপোল বন্দরের ৩৫ নম্বর...

কুয়াশায় নিরাপদে গাড়ি চালাতে ৪ নির্দেশনা

ঘন কুয়াশার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। এ অবস্থায়...