চুয়াডাঙ্গায় রঙিন ফুলকপি চাষ করে প্রথমবারেই সফল মানিক রতন

মফিজ জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা: সাদা রঙের ফুলকপি খেতে অভ্যস্ত চুয়াডাঙ্গার মানুষ এখন পাচ্ছে রঙিন ফুলকপি। রঙ দেয়া নয়, প্রাকৃতিক ভাবেই হলুদ ও বেগুনি রঙের এই ফুলকপির চাষ হয়েছে সদর উপজেলার হুচুকপাড়া গ্রামের মাঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে সাদার তুলনায় রঙিন ফুলকপির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি। প্রথমবারের মতো নিজের ১৫ কাঠা জমিতে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষ করেছেন সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হুচুকপাড়ার ছেলে মানিক রতন।

সরেজমিনে গিয়ে মানিক রতনের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট বেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি চাষবাদ শুরু করেন। নতুন নতুন ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি ইউটিউব দেখে এ বছর রঙিন ফলকপি চাষে আগ্রহী হন। রঙিন ফুলকপির বীজ দেশের বাজারে না পেয়ে ভারতে ছুটে যান। সেখানে বীজ পেতে দেরি হওয়ায় দেশে ফিরে আসেন।

গ্রাম থেকে সিনজেনটা কোম্পানির প্রতিনিধির মাধ্যমে রঙিন ক্যারেনটিনা ও ভেলেনটিনা জাতের ২০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে চারা তৈরীর জন্য বপণ করেন। ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্য চারা লাগানোর উপযুক্ত হয়। ৬৫-৭৫ দিনের মধ্যে কপি বাজারে বিক্রির উপযুক্ত হয় ।

তিনি আরো জানান,ভেলেনটিনা বেগুনি ও ক্যারেনটিনা হলুদ রঙের। রঙিন ফুলকপি চাষে আলাদা কোনো পদ্ধতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সাদা ফুলকপি চাষের মতো রঙিন ফুলকপিও একইভাবে চাষ করতে হয়। ১৫ কাঠা জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। তার গাছে তিন হাজার ৫০০টি হলুদ ও বেগুনি জাতের ফুলকপি ফলেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮০ হাজার টাকা।

আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ মানিক রতনের ফুলকপি ক্ষেত দেখতে আসছেন। কেউ কেউ রঙিন ফুলকপি হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে বাগান থেকেই কপি কিনে নিচ্ছেন।

সবজিখেত দেখতে আসা সদর উপজেলার দামুড়হুদা উপজেলার দশমী পাড়ার আশা মোল্লা জানান, ভালাইপুর মোড়ে বাজার করতে এসেছিলাম। বাজারে রঙ্গিন কপি দেখে পাঁচ কেজি কপি কিনলাম । আমারও ইচ্ছা আছে আগামী মৌসুমে রঙিন ফুলকপি চাষ করার। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে।

ভালাইপুর বাজারে সেবা ক্লিনিকের চিকিৎক জাভেদ জানান, সাধারণত সাদা ফুলকপি বাজারে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে রঙিন ফুলকপি প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে অহরহ বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে এই রঙের কপি আনার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরিন আজিজ বলেন, জেলায় এই প্রথম রঙিন ফুলকপি চাষ হয়েছে, সাদা রঙের ফুলকপির খরচে রঙিন ফুলকপি চাষ করা যায়, এর বাজার মূল্যে বেশী। লাভ বেশী হওয়ায় কৃষকরা এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

স্বাআলো/এসআর

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

বিএসপির সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ (বিএসপি) যশোর এর ২৪৫...

ফের পরীর সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন রাজের

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি ও নায়ক শরিফুল রাজের...

বেনাপোল কাস্টমসের অভিযানে অবৈধ পণ্যর ট্রাক আটক

মিলন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: বেনাপোল বন্দরের ৩৫ নম্বর...

কুয়াশায় নিরাপদে গাড়ি চালাতে ৪ নির্দেশনা

ঘন কুয়াশার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। এ অবস্থায়...