নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে যশোর পৌরসভার রেলস্টেশন হরিজন কলোনীর বিদ্যুৎ লাইন সচাল করে না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুশিয়ার দিয়েছেন পৌরসভার হরিজনরা।
বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিলে এ ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে রেলস্টেশন হেলা সমাজ ও বাজার হরিজন কলোনী, মনিহার তালতলা কলোনী, পুরনো পৌরসভা কলোনী ও ধর্মতলা কলোনীর তিন শতাধিক হরিজনরা দুই ঘণ্টা ধরে শহরের বিক্ষোভ মিছিল করে।
যশোর পৌরসভার শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি মতি লাল বলেন, দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে যশোর পৌরসভার রেলস্টেশনের হরিজনদের দুইটি কলোনীর বিদ্যুৎ লাইন সচাল করে না দিলে যশোর পৌরসভার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন সংগ্রাম ঘোষণা করবো।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের বাপ দাদারা বসবাস করে আসছেন। তবে কখনো তাদের বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়নি। প্রিপেইড মিটার দেয়া মানে তাদের বিদ্যুৎ বিল আগে দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। পৌরসভা তাদের মাত্র তিন হাজার টাকা করে বেতন দেয়। তা দিয়ে কী হয়। বছরের পর বছর পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে তামাশা করে আসছে। বেতন ভাতা না বাড়িয়ে বিদ্যুৎ বিল তাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা বড় অমানবিক বিষয়। শুনছি কয়েক কোটি টাকার বকেয়া বিল চাপবে। দিতে দেবে পৌরসভায়। এ নিয়ে কয়েকবার পৌর মেয়রের সঙ্গে কথাও বলেছি। এখানে প্রিপেইড মিটার লাগানো যাবে না, সংযোগ বিচ্ছিন্নও করা যাবে না।
এদিকে, বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার প্রতিবাদে গত দুইদিন কাজ বন্ধ রেখেছে যশোর পৌরসভার হরিজনরা। পৌরসভা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রাখায় শহরের মোড়ে মোড়ে ময়লার স্তুপ জমা হয়েছে। পশু-পাখি ময়লা হাঁচড়ানোয় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে পথচারীদের মুখে কাঁপড় দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
শহরে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ময়লা স্তুপ তৈরি হয়েছে। কুকুর, বিড়াল, পাখি পা দিয়ে হাঁচড়িয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষাথী ও পথচারীরা মুখ চেপে চলাচল করছে।
শহরের রেলগেট তেতুলতলা মোড় এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা না নিয়ে যাওয়ায় পশু-পাখিতে এসব ময়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিরন লাল সরকার বলেন, বর্তমান মেয়র আমাদের সাথে আলোচনা না করে রেল স্টেশন এলাকার হরিজন কলোনির বিদ্যুৎ এর লাইন গত দুইদিন ধরে বিচ্ছিন্ন রেখেছে। তার প্রতিবাদে আমরা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা পৌরসভার সকল পরিচ্ছন্নের কাজ বন্ধ রেখেছি। আমরা নিজের আলোচনা করেছি। আজ থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচী দেবো।
যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকছিমুল বারী অপু বলেন, পৌরসভার কোনো কোনো এলাকায় এনজিও কর্মীরা কাজ করে আবার কোনো কোনো এলাকায় পৌরসভার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা কাজ করে। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা যে এলাকায় কাজ করে। এদের কিছু পরিচ্ছন্ন কর্মী স্ট্রাইক করেছে।
তিনি আরো বলেন, তিনটি কলোনীর বিল বাকী শুধু সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা। তাদের এ টাকা পৌরসভা পরিশোধ করবে না। তারা বলেছে, ওদের দাবি না মানলে তারা ডাস্টবিনের ময়লা নেবে না ও রাস্তা ঝাড়ু দেবে না। এখন তারা যাই করুক তাদের সাথে কোনো আপোষে যাওয়া হবে না। আমরা নিজেরা সবাই বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবো কি করা যায়।
স্বাআলো/এস