প্রায় তিন বছর ধরে চলমান আলোচনা শেষে যুক্তরাজ্য ও ভারত অবশেষে একটি ‘যুগান্তকারী’ বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতের পোশাক ও জুতা শিল্পে যুক্তরাজ্যে রপ্তানিতে শুল্কছাড় দেওয়া হবে।
এর ফলে ভারতীয় উৎপাদক ও রপ্তানিকারকরা ইউরোপীয় বাজারে প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রবেশ করতে পারবে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যও ভারতে গাড়ি, মদসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানিতে সুবিধা পাবে। খবর: বিবিসি
যদিও এই চুক্তি বাণিজ্যে বড় ধরনের অগ্রগতি আনছে, অভিবাসন নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাজ্যের সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অংশগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।”
চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে গত সপ্তাহে লন্ডনে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। বৈঠকে দুই দেশই পারস্পরিক স্বার্থে একে অপরের বাজার উন্মুক্ত করার বিষয়ে একমত হন।
ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী রেনল্ডস বলেন, “এই চুক্তি কার্যকর হলে যুক্তরাজ্যের ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক সুবিধা পাবেন। ভারতীয় পণ্য বাজারে আরও সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাবে, এবং ব্রিটিশ পণ্যের জন্য একটি বিশাল বাজার উন্মুক্ত হবে ভারতে।”
২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৪১ বিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্য হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চুক্তিটি কার্যকর হলে ২০৪০ সালের মধ্যে বছরে অতিরিক্ত ২৫.৫ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত বাণিজ্য বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় তৈরি পোশাক ও জুতা শিল্প এই চুক্তির সবচেয়ে বড় উপকারভোগী হবে। যুক্তরাজ্যের বাজারে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য করমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হলে, বাংলাদেশের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া আরও সহজ হবে।
ভারতীয় শিল্পমহল এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। ‘অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের সভাপতি বলেন, “এই চুক্তি আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির এক নতুন পথ খুলে দিয়েছে।”