ভারতে তাপপ্রবাহে একদিনে ৮৫ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ভারতের ওড়িশ্যা, বিহার, ঝাড়খন্ড, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশে একদিনে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বিহার রাজ্যের অরঙ্গাবাদ জেলায় সর্বোচ্চ মারা গেছেন ১৯ জন। গত বৃহস্পতিবার সেখানে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৮ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক খবরে বলা হয়, ওইসব এলাকার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেন, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে হাসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন মানুষজন। এর প্রভাবে মারা যাচ্ছেন বয়োজ্যেষ্ঠরা।

এর আগে বুধবার দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এদিন শহরতলি মুঙ্গেশপুরে ৫২ দশমিক তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

ওড়িশ্যা

ভারতের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওড়িশ্যার মানুষ। রাজ্যটিতে গত কয়েক দিন আগে থেকে বাতাসের আদ্রতা উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে। সেখানে তাপমাত্রার পারদ গিয়ে ঠেকে ৫০ ডিগ্রিতে।

ওড়িশ্যা স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যটিতে একদিনে হিট স্ট্রেসে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন রোরকেলা শহরের সুন্দরগড়, সাম্বালপুর ও বোলানগির জেলায়।

গত বুধবার ৪১ জন মারা যান। রোরকেলা সরকারি হাসপাতালে দুপুর দেড়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত আটজন মারা যান।

রাজ্যটির জনস্বাস্থ্য পরিচালক নীলাকণ্ঠ মিশরা বলেন, চলতি তাপপ্রবাহে রাজ্যটিতে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘গরমের কারণে যারা মারা গেছেন তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’

রাজ্যটির ‍কিছু ‍কিছু স্থানে গত শুক্রবার তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। সাম্বালপুরে ৪৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঝারুসুগাদায় ৪৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং হিরাকুন্ডে ৪৪ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে। উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে আদ্রতা ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।

বিহার

চলমান তাপপ্রবাহে বিহার রাজ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। রাজ্যটির আরওয়াল, বুক্সার, রোহতাস ও বেগুসরাই জেলায় আটজন মারা গেছেন। বোজপুরে নির্বাচনের কাজে যুক্ত পাঁচ ব্যক্তিসহ মারা গেছেন নয়জন। জাহানাবাদে এক সেনাসহ মারা গেছেন আটজন। কাইমুর জেলায় এক শিক্ষকসহ মারা গেছেন ছয়জন। গায়াতে মারা গেছেন তিনজন। শেখপুর ও মুঙ্গেরে দুইজন করে মারা গেছেন।

হিটস্ট্রোকে একটি রেলস্টেশনে দুইজন ও একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এক কৃষি কর্মকর্তা। এ ছাড়া গোপালগঞ্জ, জামুই, লক্ষ্মীসরাই ও পূর্ব চম্পারণ জেলা থেকেও গরমের কারণে মৃত্যুর খবর জানা গেছে। বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে তিন শতাধিক মানুষ ভর্তি হয়েছেন। অরঙ্গাবাদ জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ২০০ জন।

ঝাড়খন্ড

প্রচণ্ড গরমে ঝাড়খন্ড চারজন মারা গেছেন। অতিরিক্ত রোগীর চাপে রাজ্যটির বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে কোনো স্থান নেই। খোলা জায়গায় রোগীর বিছানা বসিয়ে চিকিৎসা চলছে। ঝাড়খন্ড জাতীয় হেলথ মিশনের পরিচালক ডা. অলক ত্রিবেদী বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাআলো/এস/বি

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

পটুয়াখালীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: মহান ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে...

কেউ যেনো মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: জামায়াতে আমির

ছাত্রদের স্যালুট জানানোর ইচ্ছা পোষণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর...

নড়াইলে ইউপি সদস্যকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা

নড়াইলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারী (৫০) ইউপি সদস্যের মৃত্যু...

ফের বাজার থেকে উধাও সয়াবিন তেল

সয়াবিনের সংকট কাটাতে চলতি মাসের শুরুতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে...