হামজার অভিষেক গোল, বাংলাদেশের দাপুটে জয়

স্পোর্টস ডেস্ক স্পোর্টস ডেস্ক | June 5, 2025

দীর্ঘদিন পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরে দারুণ এক জয় দিয়ে উপলক্ষ্যটি রাঙিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা। দলের পক্ষে গোল দুটি করেন মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী এবং সোহেল রানা।

বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই প্রীতি ম্যাচে জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচায় অভিষেক হয়েছে বেশ কয়েকজন ফুটবলারের। বিশেষ করে ইংলিশ লিগে খেলা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী এবং ইতালি প্রবাসী ফরোয়ার্ড ফাহমিদুল ইসলামের খেলা দেখতে মুখিয়ে ছিলেন দর্শকরা। মাঝমাঠে জামাল ভূঁইয়ার সাথে হামজা চৌধুরীর রসায়ন বেশ উপভোগ্য ছিল।

ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ ছিল আক্রমণাত্মক। ডান প্রান্ত দিয়ে একের পর এক আক্রমণে ভুটানের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে স্বাগতিকরা। গোল পেতেও খুব বেশি সময় লাগেনি। ম্যাচের মাত্র ছয় মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার নেয়া কর্ণার কিকে বক্সের সামনে হেড করে দলকে এগিয়ে দেন অভিষিক্ত হামজা চৌধুরী (১-০)। হোম ম্যাচে অভিষেকেই গোল করে দর্শকদের মন জয় করেন হামজা।

প্রথমার্ধে ফাহমিদুল ইসলামের গতির ঝড়ও দেখে দর্শকরা। তার গতির কাছে বারবার পরাস্ত হচ্ছিল ভুটানের রক্ষণভাগ। ৩০ মিনিটে ফাহমিদুল থেকে বল পেয়ে রাকিব হোসেন শট নিলেও গোল হয়নি। এছাড়া জামাল ভূঁইয়ার একটি শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ফাহমিদুল বাম প্রান্ত দিয়ে বেশ কয়েকটি ভালো কাটব্যাক করলেও সেগুলো গোলে পরিণত হয়নি। ডানপ্রান্তেও কাজেম শাহ ও তাজউদ্দিনরা উজ্জ্বল ছিলেন। প্রথমার্ধে আর গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

ঢাকা স্টেডিয়ামে ফিরছে আন্তর্জাতিক ফুটবল

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা দলে পরিবর্তন আনেন। হামজা, জামাল ভুইয়া ও কাজেম শাহকে তুলে নিয়ে হৃদয়, মোরসালিন ও ইব্রাহিমকে মাঠে নামান। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে খেলোয়াড়দের পরখ করতেই এই পরিবর্তন আনা হয়। প্রীতি ম্যাচে সাধারণত ৫ জনের বেশি খেলোয়াড় বদল করা যায়।

দ্বিতীয়ার্ধের তিন মিনিটেই (ম্যাচের ৪৮ মিনিট) ব্যবধান বাড়ান সোহেল রানা। দূরপাল্লার এক দুর্দান্ত শটে ভুটানের জালে বল পাঠান এই সিনিয়র ফুটবলার (২-০)। এরপর রাকিব হোসেন সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করেন। খালি বারপোস্টেও বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে গোল মিসের হতাশায় ভুগতে দেখা যায় তাকে।

ফাহমিদুল ইসলাম মাঠ ছাড়ার পর খেলার গতি কিছুটা কমে আসে। দুই গোল পাওয়ার পর বাংলাদেশ অনেকটা নির্ভার হয়ে খেলে। তবে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম বা শেখ মোরসালিনরা ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেন।

ম্যাচের অনেকটা ধারার বিপরীতে ৭৬ মিনিটে গোল প্রায় হজমই করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কর্নার থেকে আসা বল ফাঁকায় পেয়ে যান সেলটব দর্জি, তবে তার হেড লক্ষ্যে থাকেনি।

ম্যাচের শেষদিকে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার সাদউদ্দিন ইনজুরিতে মাঠ ছাড়লে দুশ্চিন্তা বাড়ে। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। খেলোয়াড় বদলের কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় শেষ কয়েক মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। ১০ জনের দল নিয়েও দারুণ সুযোগ তৈরি হলেও ভুটান গোলরক্ষক তা রুখে দেন। ইনজুরি সময়ে ভুটানের জিগমে নামগয়ালের একটি শট দুর্দান্ত দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়ে দলের ত্রাতা হন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। পুরো ম্যাচে খুব বেশি পরীক্ষা দিতে না হলেও শেষের এই সেভটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের ম্যাচে হামজা চৌধুরী ও ফাহমিদুল ইসলাম ছাড়াও ফরোয়ার্ড আল আমিন জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক করেছেন। ঘরোয়া ফুটবলে ভালো খেলার পুরস্কার পেলেন এই ম্যাচে। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে দলের শক্তি পরখ করতে কোচ মোট ৬ জন খেলোয়াড় বদল করেছেন।

২-০ গোলের জয় নিয়ে জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেরাটা সফলভাবেই সম্পন্ন করল বাংলাদেশ দল।

স্বাআলো/এস