চীনের পূর্ব উপকূলীয় শহর কিংডাওতে ইরান, রাশিয়া ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকটি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘর্ষ ও ইউরোপে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরবের খবর অনুযায়ী, বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রে বেলোসোভ বৈঠকে বিশ্বব্যাপী বাড়তে থাকা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল এবং আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।” তাঁর মতে, বিশ্বজুড়ে চলমান উত্তেজনা এবং সংঘর্ষের পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন এই বৈঠককে বিশ্বে “জটিল অস্থিরতা ও পরিবর্তনের যুগ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) স্থিতিশীলতার নোঙর হিসেবে কাজ করা আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।”
বৈঠকে ইরান, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংঘর্ষও আলোচিত হয়। চীন ইতোমধ্যেই ইরানকে কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, চীন সম্ভবত এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন ইরানকে কেবল কথার মধ্যেই সমর্থন জানাতে পারে, তবে চীন বাস্তবিকভাবে ইরানের প্রতি কোনো ধরনের সক্রিয় সহযোগিতা বা অস্ত্র সরবরাহ করবে না।
এ বৈঠকটি চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ ছিল, যেখানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। চীন দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন শক্তি বলয়ের প্রতিপক্ষ হিসেবে এসসিও’কে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান উত্তেজনা ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে, ইরান, রাশিয়া ও চীনের এই বৈঠকটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনীতি নিয়ে একটি নতুন দিক নির্দেশ করে। চীন তার অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে, যেখানে তারা ইরানের প্রতি সমর্থন জানালেও, সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে চায় না।