প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্টোর ক্ষমতায় এক বছর পূর্তিতে সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানী জাকার্তায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। এটি ছিল সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটি বড় প্রতিবাদ, যা গত দুই মাস আগে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংস বিক্ষোভের রেশ টেনে এনেছে।
প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী হলুদ ও নীল জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে জড়ো হয়, যেখানে প্রাবোওয়ের মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছিল। যদিও আগস্টের দেশব্যাপী ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের তুলনায় এই সমাবেশে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কম ছিল, তবুও এটি সরকারের প্রতি ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের ইঙ্গিত বহন করে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা “ফ্রি মিল প্রোগ্রাম মানে বিষ!” লেখা ব্যানার প্রদর্শন করে, যা প্রেসিডেন্টের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ – বিনামূল্যে স্কুল খাবার কর্মসূচির বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ। এই কর্মসূচির আওতায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও গর্ভবতী নারী খাবার পেলেও, সম্প্রতি হাজারো শিক্ষার্থীর খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এই কর্মসূচির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
জায়াবায়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছর বয়সী ছাত্র মাওলানা সাই বলেন, “অনেক সমস্যা এখনো রয়ে গেছে, যদিও কিছু উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সরকারকে নীতিগত সংস্কার আনতে হবে, বিশেষ করে খাবার কর্মসূচিতে।”
গত আগস্টে পুলিশের গাড়ি এক ডেলিভারি ড্রাইভারকে চাপা দিয়ে হত্যার পর বিক্ষোভ তীব্র হয়, যা প্রাবোওয়ের গত বছরের ভূমিধস বিজয়ের পর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা দেয়। জনপ্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট সোমবারের এই বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়ে ইনস্টাগ্রামে পোস্টার প্রকাশ করেছিল।
ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন এজেন্সির রাজনীতি বিশ্লেষক ওয়াসিস্তো রাহারজো জাতি মন্তব্য করেন, “প্রাবোও সরকারের প্রথম বছরটি বেশ অস্থির ছিল। সরকারের নীতিনির্ধারণে জনঅংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার অভাব স্পষ্ট।”
এদিকে, একইদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রাবোও দীর্ঘ বক্তব্য দেন এবং ‘ফ্রি মিল’ প্রোগ্রামকে সমর্থন জানিয়ে বলেন যে সরকার উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরো জানান, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্কুল সুবিধা চালু রাখতে সরকার ব্যয় সংকোচন করেছে এবং কিছু তহবিল শিক্ষা খাত থেকে অন্য খাতে সরিয়ে নিচ্ছে। এই পদক্ষেপগুলোও জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
স্বাআলো/এস
