আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এক নয়। আমরা ১৬ তারিখ পর্যন্ত দেখবো কার কী অবস্থা? কে বিদ্রোহী, কে স্বতন্ত্র, এগুলো দেখে আমাদের একটা স্ট্রাটেজি আছে সে অনুযায়ী এগিয়ে যাবো।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
১৪ দলীয় জোট শরিকদের আসন সমঝোতা নিয়ে ক্ষোভের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বলেছি যে নির্বাচন যারা করবে তারে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। জোটের মধ্যে যদি কোনো আসন ভাগাভাগির বিষয় সেটা এখনো সময় আছে। আগে মনোননয়ন পত্র জমা দিন। আর এখানে বিভ্রান্তির কিছু নেই। ইলেকটেবল নয় এমন প্রার্থী মনোনয়ন আমরা কেন দেবো? যাকে ক্রেন দিয়েও তোলা যাবে না? এরকম কেন্ডিটেডকে(প্রার্থী) কেন আমরা দিতে যাবো? এখানে বিভ্রান্তি তাদের রয়েছে কি না আমি জানি না?
তিনি আরো বলেন, আমি যেটা বলেছি মনোনয়নপত্র জমা দিন ১৭ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে এই সময় পর্যন্ত জোটের মধ্যে এডজাস্টমেন্ট….। আমাদের নিজেদের আসন বন্টনের প্রশ্নে যথেষ্ট সুযোগ আছে। এর মধ্যে আমরা করতে পারবো। জোট তো আমরা ভেঙে দেই নাই। জোট আছে।
তিনি বলেন, চমকের মধ্যে আছে জাতীয় পার্টি। তারা ২৯৩টি সিটি কনটেস্ট করবে, তৃণমূল বিএনপি ৩০০ সিটে কনটেস্ট করবে, এগুলো তো চমক। এগুলো হবে আমরা কেউ কি ভেবেছিলাম? এগুলো তো চমক। শুনতে পাচ্ছি আরো একজন বিএনপি নেতা কারগার থেকে বেরিয়েছিলেন। তিনিও হয়ত ইলেকশন করতে পারেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে আমরা একটা সুন্দর ইলেকশন (নির্বাচন) করতে চাই। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই। আগামী নির্বাচন একটা ভাল নির্বাচন হবে। ভাল টার্ন আউটও হবে। কারণ মহিলাদের জাগরণ দেখা যাচ্ছে। উৎসাহ উদ্দীপনা সারাদেশে। ভোটারবিহীন নির্বাচন বলার সুযোগ থাকবে না। ভোটাররাই আসবে এবং যথেষ্ট টার্ন আউট হবে। উন্নত দেশগুলোর কারো চেয়ে কম হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপির শমসের মবিন, তৈমুর আলম খন্দকার তারপর আরো দুইটা একটা নাম আছে যাদেরকে বহিস্কার করা হয়েছে। এরাও কি আওয়ামী লীগের নাকি?
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোটের উৎসাহিত করা এটা দলের কোনো কৌশল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কৌশলটার পরিণতি যখন আসবে তখন আপনি কৌশলটার যথার্থতা বুঝতে পারবেন। নিশ্চয়ই আমাদের একটা স্ট্রাটেজি আছে। সেটা ভেবেই আমরা করেছি। সময়মতো এটা জানবেন। তবে ঢালাওভাবে এই বিষয়টা আমরা চালু করবো না।
আপনারা নৌকার প্রার্থী ঠিক করে দিয়েছেন আবার কারা বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন সেটাও ঠিক করে দিচ্ছেন? এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী আর স্বতন্ত্র প্রার্থী তো এক না! রেবেল আর ইন্ডিপেন্ডেট এই দুইটা শব্দই তো বিপরীতমুখী। আমি তো আপনাদের বলেছি আমরা ১৬ তারিখ পর্যন্ত দেখবো কার কি অবস্থা? কে বিদ্রোহী কে স্বতন্ত্র? এগুলো দেখে আমাদের একটা স্ট্রাটেজি আছে সে অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাবো।
আসন বন্টন নিয়ে শরিকদের ক্ষোভের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম রাশেদ খান মেনন তো তিনটা মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তাহলে ক্ষোভ কোথায়? আর আসন বন্টনের সুযোগওতো আছে। এডজাস্টমেন্টের সুযোগ আছে। শরিকদের তো হতাশ করা হয়নি। শরিকদের একোমোটেড করতে গিয়ে যদি ইলেকটেবল লোক না আসে তাহলে ইলেকশনে জিতবো কিভাবে? আমরাও ইউনেবল ক্যান্ডিকেটও চাই। আর এই শরিকরা তো আমাদের সাথে আগেও ইলেকশন করেছেন। এবার তারা করতে পারবেন না, এমন কথা তো আমরা বলেনি।এবার তো আর ২০১৮ অবস্থা না। এবার কার কি অবস্থা? জনমত কোন দিকে এগুলো দেখেই বিবেচনা করা হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিটার হাস মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তার চলাফেরা তার কার্যক্রমের একটা সীমানা আছে। আমরা বিশ্বাস করি তিনি সেটা মেনে চলবেন। তাকে আমরা আমাদের পক্ষেও চাইনি। অন্য কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষেও তিনি পক্ষপাতিত্ব করেন সেটাও আমরা চাই না।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
স্বাআলো/এসএ