ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় একদিনে আরও কমপক্ষে ৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে নিহতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে ৫৮ হাজার ২৬ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।
সোমবার (১৪ জুলাই) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী রোববার গাজার বিভিন্ন অংশে আবারো বিমান হামলা চালিয়েছে। উপত্যকাটির জনবহুল বাজার ও একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো এসব হামলায় কমপক্ষে ৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।
গাজা শহরের একটি বাজারে চালানো হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন গাজার প্রখ্যাত চিকিৎসক আহমেদ কান্দিল। অন্যদিকে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি পানি সংগ্রহস্থলে চালানো হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন।
১২ দিনের যুদ্ধে ৫০০ ইসরায়েলি নিহত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় শিশুরা পানি আনতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল, তখনই ওই স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল একজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা; কিন্তু ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ক্ষেপণাস্ত্র অন্যত্র গিয়ে আঘাত করে। তবে এই দাবির পক্ষে কোনও স্বাধীন উৎস থেকে তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ২৬ জন। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন।
এদিকে, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানির সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ পানিশোধন ও নিষ্কাশন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে কিছু নির্দিষ্ট পানিকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, শুধু জুন মাসেই ৫ হাজার ৮০০ টিরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার জনের অবস্থা গুরুতর। রোববার অপুষ্টিতে ভুগে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইউনিসেফ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, “শিশুদের দেহ গলে যাচ্ছে। এটি শুধু পুষ্টির সংকট নয়, এটি শিশুদের বেঁচে থাকার জরুরি অবস্থা।”
স্বাআলো/এস