জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে বামনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ এবং নির্মিত বামনী রেগুলেটর অবিলম্বে চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে হাজারো মানুষ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়ার নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানববন্ধন উপলক্ষে সকাল থেকেই চরএলাহী এবং পার্শ্ববর্তী চরফকিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে শত শত নারী-পুরুষ ভাঙন কবলিত এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চর কচ্ছপিয়ার বামনী নদীর তীরে হাজারো মানুষের ঢল নামে। অংশগ্রহণকারীরা নদী ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়ান।
নোয়াখালীতে ট্রাকের পিছনে বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কা, ২ বন্ধু নিহত
মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন চরএলাহী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল তোতা, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ আইয়ুব আলী, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিমসহ স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেকে।
বক্তারা বলেন, কয়েক বছর আগে বামনী নদীর ভাঙন ঠেকাতে চরএলাহী এলাকায় একটি ১৯ ভেন্টের রেগুলেটর নির্মাণ এবং বিকল্প খাল খনন করা হয়েছিলো। কথা ছিলো রেগুলেটর নির্মাণ শেষ হলেই বামনী নদীতে একটি ক্লোজার বা বাঁধ নির্মাণ করে রেগুলেটরটি চালু করা হবে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই ক্লোজারটি আজও নির্মাণ করা হয়নি। এর ফলে চাপরাশির খালের দুই পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে এবং এরই মধ্যে শত শত পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
তারা আরও বলেন, বর্তমানে বামনী নদীর ভাঙন যে তীব্র আকার ধারণ করেছে, তাতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নদীর তীরবর্তী আরও বহু বাড়িঘর, ফসলি জমি, মাছের খামার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বামনী নদীতে প্রতিশ্রুত ক্লোজার নির্মাণ করে রেগুলেটরটি চালু করার জোর দাবি জানান। একই সঙ্গে, তারা আলগী খাল দিয়ে অবৈধভাবে বালুবাহী ট্যাংকার চলাচল বন্ধেরও দাবি করেন। তাদের অভিযোগ, এসব ভারী ট্যাংকার চলাচলের কারণে খালের দুই পাড় আরও বেশি করে ভাঙছে।
সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে নোয়াখালীতে মানববন্ধন
নদীর ভাঙনে ভিটেমাটি হারানো আব্দুল খালেক আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, বামনী নদী থেকে আমার বাড়ি প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিলো। বছরখানেক আগে সব নদীতে চলে গেছে। এখন অন্যের জমিতে কোনোমতে একটা ঘর তুলে আছি। যেভাবে নদী ভাঙছে, সামনের বর্ষায় হয়তো এই আশ্রয়টুকুও থাকবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী বলেন, বামনী নদীতে ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, যত দ্রুত সম্ভব নদীতে বাঁধ দিয়ে আলগী খালকে বিকল্প খালের সঙ্গে যুক্ত করে ১৯ ভেন্টের বামনী রেগুলেটরটি চালু করে দেয়ার। এটি করা সম্ভব হলে নদীর ভাঙন অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস