আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। এরই মধ্যে নতুন করে ইরানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে মার্কিন মদদপুষ্ট রাষ্ট্রটি। সব মিলিয়ে এই মূহুর্তে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে; সর্বাত্মক যুদ্ধের দামামা অঞ্চলটিতে। সবশেষ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতেও ইরানের ইস্পাহান শহরে পারমাণবিক স্থাপনার কাছাকাছি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
এরই মধ্যে সংঘাতময় মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে দিতে ইসরালের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের আরেকটি স্বাক্ষর রাখলো বাইডেন প্রশাসন। জাতিসংঘ ও শান্তিকামী বিশ্বের সব আহ্বানকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইসরায়েলের কাছে আরও ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের ভারী সমরাস্ত্র বিক্রি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মার্কিন কংগ্রেসের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিশেষ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন আরেকটি অস্ত্র চুক্তি করার কথা বিবেচনা করছে। এই চুক্তির আওতায় অস্ত্র সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ট্যাংকের গোলা, ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক যান ও ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মর্টারের গোলা পাবে ইসরায়েল।
ইতোমধ্যে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের কাছে এসব সমরাস্ত্র বিক্রির জন্য একটি প্রস্তাব কংগ্রেসনাল কমিটির সামনে এনেছে। এর আগে ইসরায়েলকে সহায়তায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আরেকটি প্রস্তাব আনা হয় ওই কমিটির সামনে।
এদিকে সিএনএনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব তোলে পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদেশ আলজেরিয়া। কিন্তু ভেটো ক্ষমতার প্রয়োগ করে প্রস্তাবটি নস্যাৎ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের আরেকটি প্রতিবেদন অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি প্রদর্শনের জন্য ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। অঞ্চলটির বিষফোঁড়া হয়ে ওঠা দখলদার রাষ্ট্রটি তার মোট অস্ত্র সহায়তার ৬৮ শতাংশই পায় তাদের মার্কিন মিত্রের কাছ থেকে। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে শুধু অস্ত্রই নয়, আর্থিক ও নৈতিক সব ধরনের সমর্থনই তারা মূলত পেয়ে থাকে মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকেই।
ইসরায়েলকে সমর্থনের ক্ষেত্রে এরপরের স্থানটিই জার্মানির। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তি চর্চার জন্য ইসরায়েলের মোট চাহিদার আনুমানিক ৩০ শতাংশ অস্ত্রই সরবরাহ করা হয় জার্মানির পক্ষ থেকে। বাদবাকি মাত্র দুই শতাংশ অস্ত্র তারা পায় ব্রিটেন, ইতালি এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর কাছ থেকে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী পেনি ওং অবশ্য সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে তার দেশ অস্ত্র সরবরাহ করেনি ইসরায়েলকে।
স্বাআলো/এস