সোনার দামে নতুন রেকর্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ববাজারে সোনার দামে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমবারের মতো এক আউন্স সোনার দাম দুই হাজার দুইশ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ এই মাইলফলক স্পর্শ করে সোনা। এ প্রতিবেদন লেখার সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০৯ ডলার। সোনার এত দাম আগে কখনো দেখিনি বিশ্ববাসী

বিশ্ববাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের বাজারেও রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে সোনা। দেশের বাজারে সোনার দাম সর্বশেষ নির্ধারণ করা হয় গত ২১ মার্চ, যা কার্যকর হয় ২২ মার্চ থেকে।

বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে সেদিন সব থেকে সোনার দাম বাড়ে। ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৯১৬ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ১৪ হাজার ৭৪ টাকা।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৭৪১ টাকা বাড়িয়ে এক লাখ আট হাজার ৮৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৩ হাজার ৩১২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৭ হাজার ৭৯৯ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। দেশের বাজারে সোনার এত দাম আগে কখনো হয়নি। বর্তমানে এই দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।

অবশ্য সোনার গয়না কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গয়না বিক্রি করা হয়। একই সঙ্গে ভরিপ্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গয়না কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে এক লাখ ২৩ হাজার ২৭৭ টাকা।

দেশের বাজারে সর্বশেষ যখন সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিলো দুই হাজার ১৫৫ ডলারের কাছাকাছি। অর্থাৎ দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর পর এরই মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৫০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘কয়েকটা জেনুইন কারণে সোনার দাম বাড়ছে। প্রথম কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ যখন সুদের হার বাড়ায় তখন সোনার দাম কমে যায়। কারণ ডলারের প্রতি মানুষ তখন ঝুঁকে যায়। ওরা গত এক-দেড় মাস আগে একটা সার্কুলার দিয়ে রাখছে সুদের হার কমিয়ে দেবে। যখন কমিয়ে দেবে তখন সোনার দিকে মানুষ ঝুঁকে যাবে। সোনার দাম তখন বাড়ে, এটা প্রধান কারণ।

এছাড়া ভূরাজনৈতিক একটা কারণ আছে। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে দিলে প্রতিটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনাকে ডলারের পরিবর্তে রিজার্ভ হিসেবে কেনে। যখন কেনে তখন সাপ্লাই চেইনে প্রভাব পড়ে। তখন যারা সোনার ব্যবসা করে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। এটাই কারণ, বলেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান।

তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের যে রেকর্ডটা আমরা দেখেছি প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ৩০০ ডলার এই বছর হয়ে যেতে পারে। সেটা রাতারাতি হবে না। তবে যেভাবে সোনার দাম বাড়ছে তাতে আমার কাছে মনে হচ্ছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল যে প্রেডিকশন করছে তা হিট করবে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

পুলিশ এখনো থানায় টাকা খাচ্ছে: সারজিস আলম

এখনো পুলিশের অনেক সদস্য দেদারছে ঘুষ গ্রহণ করছেন বলে...

৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরু আজ

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বিপিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ...

দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত, ১৮১ আরোহীর ১৭৯ জনই নিহত

দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৮১ আরোহী নিয়ে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।...

নওয়াপাড়ার সাবেক কাউন্সিলরকে কুপিয়ে হত্যা

যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর...