বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান (র.) এর মাজারের দীঘিতে থাকা দুইটি কুমিরের একটি মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বিশাল ওই দীঘির দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে দীঘির কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে মুহুর্তের মধ্যে পুলিশ, প্রাণী সম্পদ অধিদফতর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ, খাদেমসহ দর্শনার্থীরা মাজার প্রাঙ্গণে ভীড় করেন। বিকালে দীঘি থেকে কুমিরটিকে তোলার হয়েছে।
বাগেরহাটে এক রাতে ৬ দোকানে চুরি, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা
কুমিরটির মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা মনোহর চন্দ্র মণ্ডল।
দীঘির কুমিরের মৃত্যু নিয়ে ইতোমধ্যে নানা অভিযোগ উঠেছে।
কুমিরটিকে চেতনানাশকসহ ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দীর্ঘদিন ধরে দীঘির এক পাড়ে কুমিরটিকে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোটাইল ব্যাংক থেকে পাঁচটি মিঠা পানির কুমির (মার্শ ক্রোকোডাইল) এনে এ দীঘিতে ছাড়া হয়েছিলো।
বাগেরহাটে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার
ইতিহাস অনুযায়ী মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, খ্রিষ্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হযরত খানজাহান এই দীঘিতে ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দুটি কুমির ছাড়েন বলে কথিত আছে। সেই থেকে কুমির এই মাজারের ঐতিহ্য। এখানকার কুমির দেখতে দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শনার্থী নিয়মিত বাগেরহাটে আসেন। ২০১৫ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী হয়রত খান জাহান (র.) এর মাজারের দীঘির শতবর্ষী কুমিরের শেষ বংশধর ‘ধলা পাহাড়’ মারা যায়। ফলে ভারত থেকে আনা পাঁচটি কুমিরের মধ্যে দুটি কুমির ছিলো এখানে। কুমিরকে এই বাগেরহাটের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ উল্লেখ করে মাজারের দীঘিতে কুমির আনার উদ্যোগ নিতে দাবি জানিয়েছেন মাজারের খাদেমরা।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে এসেছেন। এখানে মাদ্রাজ থেকে আনা দুটি কুমির ছিলো। একটি বড় আর একটি ছোট। বড় কুমিরটি মারা গেছে। এখানে খাদেমদের অভিযোগ আছে। কুমিরের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বাআলো/এস