আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালের সঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে দর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশের। কিন্তু বাংলাদেশের প্রস্তাবিত দর অনেক কম বলে তাতে সায় দিতে এখনো পর্যন্ত সম্মত হয়নি দেশটি। ফলে, দর কষাকষি চলছে দুই দেশের।
নেপালের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিপণন সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষ নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির (এনইএ) কর্মকর্তারা সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেপালের জাতীয় দৈনিক দ্য কাঠমন্ডু পোস্টকে।
এনইএর এক কর্মকর্তা কাঠমন্ডু পোস্টকে বলেন, আমরা যে দাম চেয়েছি, তা আমরা যৌক্তিক মনে করেই চেয়েছি। বাংলাদেশ যে দাম প্রস্তাব করেছে, এখনও আমরা তাতে সায় দিইনি। বাংলাদেশ কর্মকর্তারা বলেছে, এ ব্যাপারে তাদের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে আমাদের।
প্রসঙ্গত, গত বছর মে মাসে নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি এবং ভারতের তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিপণন সংস্থা এনটিপিসি ও এনভিভিএন এর সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি করে বাংলাদেশের সরকার।
সেই চুক্তির শর্ত অনুসারে, ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাবে নেপাল। ভারত-নেপাল সীমান্তের ধালকেবার-মুজাফফরপুর থেকে লাইন বা তারের মাধ্যমে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাবে এ বিদ্যুৎ। চুক্তিতে প্রতি ইউনিটের দাম ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৩০ নেপালি রুপি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ দশমিক ৬৮ টাকা।
আগামী জুন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হওয়ার কথা। এর মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পাঁচ নেপালি রুপি ধার্য করার প্রস্তাব করেছে বলে জানিয়েছেন এনইএ’র একজন কর্মকর্তা।
পাকিস্তানে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হলেন মরিয়ম
এতেই খানিকটা বেঁকে বসেছে নেপালের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এনইএ’র একজন কর্মকর্তা বলছেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বিদ্যুৎ পাঠানো সংক্রান্ত সার্ভিস চার্জ, হুইল চার্জ আমাদের বহন করতে হবে না। এনভিভিএন এই খরচ বহন করবে। বিদ্যুতের দাম যদি ইউনিট প্রতি ৯ দশমিক ৩০ নেপালি রুপি ধরা হয়, তাহলে সেখান থেকে নেপাল পাবে পাঁচ দশমিক ২৫ রুপি। বাকিটা পাবে ভারতীয় সংস্থা। কিন্তু, বাংলাদেশ যে দাম প্রস্তাব করেছে, তা কার্যকর হলে আমাদের ভাগে প্রায় কিছুই থাকে না।
এনইএর নির্বাহী পরিচালক কুল মান ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত সপ্তাহে ঢাকা এসেছিলো। সে সময় বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বিদ্যুতের দাম নিয়ে দর কষাকষি হয় বলে জানা গেছে। তবে, এ বিষয়ে চুড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ নিয়ে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই চুড়ান্ত মত জানাবেন তারা।
এনইএ’র নির্বাহী পরিচালক প্রদীপ কুমার ঠিকে অবশ্য ত্রিদেশীয় বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে এখনও আশাবাদী। কাঠমন্ডু পোস্টকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ক্রয় করার জন্য প্রস্তুত, আর আমরা বিক্রির জন্য প্রস্তুত। আমাদের সর্বশেষ বৈঠক ইতিবাচক ছিলো এবং আমরা আশাবাদী যে পরবর্তী বৈঠকে আমরা এ ব্যাপারে মীমাংসায় পৌঁছাতে পারবো।
স্বাআলো/এস